নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

আমার প্রিয় শিক্ষক ।। অরিশা জান্নাত

ডাক্তার কাওসার ও একজন শিক্ষক ।। হামমাদ রাগিব
Share on FacebookShare on Twitter

শিক্ষকদের প্রিয় হয়ে ওঠার কারণ বর্ণনা করাটা বোধহয় একটু কঠিনই। কারণ, তাঁদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের স¤পর্কটা আত্মার স¤পর্ক। তাঁরা হৃদয় থেকে হৃদয়ে শুদ্ধতার বীজ বপন করেন। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করেন চারদিক। জীবনে বেড়ে ওঠার গল্পে শিক্ষকের ভ‚মিকা অনন্য। তাঁরা শিক্ষার্থীদের মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে যাঁর যাঁর স্থান থেকে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। এজন্য একাধিক শিক্ষকের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করাটা সত্যিই কষ্টসাধ্য।
তারপরও কিছু কিছু মানুষ হৃদয়ের গভীরে বাস করেন। হয়তো কিছুটা গুণমুগ্ধ, কিছুটা সান্নিধ্য অথবা কিছু বাড়তি ¯েœহ তাঁদেরকে স্মৃতিতে অ¤øান করে রাখে। আমার শিক্ষাজীবনে তেমনি এক মহিরুহ আব্দুল বাসেত স্যার। গ্রামের লোকেরা তাঁকে ‘বাসেত মাস্টার’ বলে ডাকে। তাঁর আদতই এমনÑযেন তিনি কোনো গল্প-উপন্যাসের আদর্শ চরিত্র।
স্যারের সঙ্গে পরিচয়ের ধরনটা সাধারণ হলেও স্মৃতিটা আমার কাছে আজও অসাধারণ। ডিসেম্বর শেষ হয়েছে সবে। জানুয়ারির শুরু। শীতের প্রকোপ তখনও কমেনি। মোটা জামাকাপড় গায়ে চড়িয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় অনেক বেলা অবধি। সকাল থেকেই তৈরি হয়ে ছিলাম। তারপরও বাবার হাত ধরে বেরোবার আগে মা আরো একপ্রস্থ মোটা কাপড় জড়িয়ে দিলেন গায়ে। একপাশে বাবা আরেকপাশে মামা। শিশিরভেজা দূর্বাঘাস মাড়িয়ে গ্রামের দক্ষিণ দিকের প্রাইমারি স্কুলটার সামনে এলাম।
তখনও ক্লাস শুরু হয়নি বোধহয়। ছেলেমেয়েরা ছুটোছুটি করছে। কেউ-বা সবে স্কুলে আসছে। সবার কাঁধে স্কুলব্যাগ ঝুলছে। আসার সময় আমার ব্যাগটাও নিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। যেটা ক’দিন আগে ঢাকায় চিড়িয়াখানা দেখে ফেরার সময় নানুমণি কিনে দিয়েছেন। কিন্তু মা বললেন, আগে নাকি ভর্তি হতে হবে।
আজ আমি স্কুলে ভর্তি হতে এসেছি। এতোদিন শুধু বড় ভাইয়া-আপুরা স্কুলে যেত। এখন থেকে আমিও যাব। কী মজা! আবার ভয়ও লাগছিল। মোর্শেদ (খালাতো ভাই) বলেছে, স্কুলের স্যাররা নাকি পঁচা। খালি মারে। বকা দেয়। বাবাকে বলতেই বাবা হাসলেন। বললেন, ‘যারা দুষ্টু, পড়াশোনা করে না, স্যাররা কেবল তাদের বকেন। আর যারা মন দিয়ে পড়াশোনা করে, তাদের বকেন না। আদর করেন।’ তারপর বাবা আমাকে বড় একটা রুমে নিয়ে গেলেন। সেখানে একটা টেবিলের পাশে কয়েকজন মহিলা বসে আছেন। আর একপাশে মোটা কাঁচের চশমা পরা একজন ভদ্রলোক বসে পেপার পড়ছেন। আমরা তাঁর সামনে গেলাম। আব্বুর সঙ্গে সঙ্গে আমিও সালাম দিলাম তাঁকে। লোকটা সালামের উত্তর দিলেন। তারপর মুচকি একটা হাসি দিয়ে আমাকে কাছে ডাকলেন। ভয় পাচ্ছিলাম খুব । কিন্তু তাঁর হাসি দেখে কিছুটা সাহস পেলাম। প্রথমে আমাকে নাম জিজ্ঞেস করলেন। তারপর কয়েকটা চকোলেট হাতে দিয়ে বললেন, ‘বলো তো এখানে কয়টা চকলেট আছে?’
আমি গুণে গুণে বলে দিলাম। স্যার আনন্দিত হয়ে সবগুলো চকোলেট আমাকে দিয়ে দিলেন। তারপর একটা ছবিওয়ালা বই দেখিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করলেন। ‘অ আ’ হবে বোধহয়। এখন আর ঠিক মনে নেই। তারপর হেসে বললেন, ‘কাল থেকে স্কুলে এসো তুমি, কেমন?’ আমি তো অবাক! শুনেছিলাম স্কুলে ভর্তির সময় নাকি মাথার ওপর দিয়ে হাত নিয়ে কান ধরতে হয়। আরও কঠিন কঠিন দাঁতভাঙা প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। কিন্তু এসবের তো কিছুই হলো না!
আমাকে মাথার উপর দিয়ে কান ধরতে বলেননি অথবা দাঁতভাঙা কোনো প্রশ্ন করেননি বলেই কি-না জানি না, প্রথম দিনই মোটা ফ্রেমের মোটা কাচের চশমা পরা মধ্যবয়স্ক সেই মানুষটা আমার প্রিয়মানুষ হয়ে গেলেন।
স্যার আমাদের ইংরেজি ক্লাস নিতেন। কিন্তু গল্প করতেন রাজ্যের সব বিষয় নিয়ে। আইজ্যাক নিউটন, টমাস আলভা এডিসন আর ইবনে সিনার আবিস্কারের মজার মজার গল্প শোনাতেন।
একদিন কলম হারিয়েছি। ক্লাসে যখন সবাই লিখছে তখন আমি বসে বসে কাঁদছি। নিজের পকেটের কলমটা বের করে স্যার সেদিন আমাকে উপহার দিয়েছিলেন।
সবসময় হাসিমুখে থাকা স্যারের চেহারাটা বদলে যেত কাউকে বেয়াদবি করতে দেখলে। কিন্তু তিনি যেন ধৈর্যের পাহাড়। কাউকে মারতেন না কখনও। সবসময় বুঝিয়ে বলতেন। এভাবেই শৈশব-কৈশোরের চারটা বছর কাটিয়েছি তাঁর ¯েœহছায়ায়। ক্লাসের বইয়ের পাশাপাশি স্কুলের লাইব্রেরির সঙ্গে পরিচয়ও তাঁর হাত ধরে। নজরুলের ছেলেবেলার গল্পটা তাঁর কাছেই শোনা। তিনি যতটা না ছিলেন অভিভাবক তারচেয়ে বেশি ছিলেন আমাদের বন্ধু । যেকোনো কথা তাঁকে অকপটে বলতে পারতাম আমরা। তিনি ছিলেন আমাদের চোখে গল্পের হাতিম তাঈ, সুপারম্যান, রবিনসন ক্রুসো।
ক্লাস ফাইভে ওঠার পর আব্বু মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিলেন। স্কুল ছেড়ে আসার আগ মুহূর্তে দেখা করতে গেলাম স্যারের সঙ্গে। ছলছল চোখে মাথায় হাত রেখে সেদিন স্যার আমাকে বলেছিলেন, ‘মা! একদিন তুই অনেক বড় হবি। কুরআনের আলোয় চারপাশের অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করবি।’ আর একটা আবদার করেছিলেন, বিশেষ মুনাজাতগুলোতে যেন তাঁর কথা স্বরণ রাখি।
তারপর অনেকগুলো বছর পেরিয়ে গেছে। সেদিনের সেই ছোট্টমণিরা অনেক বড় হয়েছে। জীবনযুদ্ধে জয়ী হতে যার যার অবস্থান থেকে প্রতিযোগিতার মাঠে নেমেছে। নানা ব্যস্ততায় স্যারের খোঁজ রাখা হয়নি তেমনটা। কিন্তু এখনও কোনো অন্যায় করার আগে স্যারের গুরুগম্ভীর আওয়াজ ভেসে আসে কানেÑ‘কখনও মিথ্যে বোলো না। মিথ্যে বলা মহাপাপ। কখনও অন্যায় কোরো না। অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়ো না।’
তাঁর কথামতো প্রকৃত বড় হওয়ার সৌভাগ্য হয়তো হয়নি, কিন্তু আমাদের প্রিয়স্যারকে আজও ভুলিনি। রাব্বে কারিমের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেনো তাঁকে তাঁর রহমচাদরে জড়িয়ে রাখেন এবং নেক হায়াত দান করে দীর্ঘজীবী করেন। আজ নবধ্বনির আয়োজনে প্রিয় শিক্ষক নিয়ে রচনা লিখতে না বসলে হয়তো জানাই হতো না প্রিয়মানুষটা আজও হৃদয়ের কতটা জায়গা দখল করে আছেন। নবধ্বনিকে অসংখ্য মুবারকবাদ।

কামারগাড়ী, সদর, বগুড়া

জুন ২০১৮

 

ShareTweetShare

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist