নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

ঘোর ।। লুবাবা সুলতানা চৌধুরী

ঘোর ।। লুবাবা সুলতানা চৌধুরী
Share on FacebookShare on Twitter

পঁচিশ মিনিট যাবৎ জ্যামে আটকা পড়েছে মীম। হেডলাইটগুলোর দিকে তাকালে মনে হচ্ছে শেয়ালের দল দাঁড়িয়ে আছে। একটু পরেই আজান দেবে। সন্ধ্যার আগে বাসায় না ঢুকলে আবার যন্ত্রণা। রিকশাওয়ালা মামাকে পাঠিয়ে রোডের ওপাশের ভোট্টাপোড়া আনালো। রিকশাওয়ালা এসে জিজ্ঞেস করল—‘বাসা কতদূর?’

‘এই তো, মামা। সামনের ঈদগাহ-গেটের পাশেই। একটু জোরে চালান।’

মিনিট পাঁচেকের মধ্যে বাসায় পৌছাল মীম। কমিটির লোকজন বসে আছে। জুনায়েদ সাহেব মেয়েকে ইশারা দিয়ে নীরবে রুমে ঢুকতে বললেন। মা তার সহজসরল মানুষ। মফস্বল এলাকায় বড় হয়েছেন। ছেলেমেয়েদের নিয়ে চিন্তা-ভাবনাও তাই অন্যরকম। মীমকে পাশে দাঁড়াতে দেখেও অহেতুক চাপাতার কৌটাটা নাড়ছেন।

‘মা, দেখো না। তোমার পছন্দের দোকান থেকে ভোট্টাপোড়া আনলাম।’

‘আমি কি আনতে বলেছিলাম? তাছাড়া পিঠা-উৎসবে ঘুরতে গিয়ে মায়ের জন্য রাস্তায় পড়ে থাকা ভোট্টা আনা তো মানায় না।’

‘পড়ে থাকা বলছো কেন? ভাবছিলাম ফেরার ঠিক আগে গরম গরম ভাঁপা পিঠা আনব। তারপর ভুলেই গেলাম।’

কোনো উত্তর না দিলেও সন্দেহটা বোধ হয় কেটেছে। নিঃশব্দে প্রস্থান নেওয়াই ভালো। নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসতে হলো। প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে স্বর্ণা বেগম রুমে এসে দেখেন মেয়ে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে। রাতে আর কেউ তাকে ডাকল না। বেখেয়ালি বাবা রাজনীতি আর কমিটির জগতে সেই কবেই হারিয়ে গেছেন। ছেলেমেয়ে কবে কী করছে এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। মাসশেষে ক’হাজার টাকা ফিস দিয়েই কর্তব্য পালন করেন। সকালে ঘুম ভাঙার পর মীম দেখল রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ।

‘শুভ, এই শুভ। দরজাটা খুলে দে বলছি।’

স্বর্ণা এসে দরজা খুলে দিলেন। শুভ স্কুলে গেছে। মায়ের অদ্ভুত এসব কাণ্ডে মীম প্রায় অভ্যস্ত। কয়েকদিন আগের কথা। শুভকে ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বললেন ‘ব্যাংকে রেখে দিয়ো।’ কদিন পর শুভ বাবার কাছে নালিশ দিয়ে বলছে—‘মা আমাকে শুধু শুধুই বোকা বানাল।’

মাকে যখন জিজ্ঞাসা করা হলো মুচকি হাসি দিয়ে বললেন, ‘অনেস্টি টেস্ট করছিলাম।’

আসলেই কি অনেস্টি টেস্ট ছিল?

কলিংবেল বাজছে। ডেলিভারি বয় কামাল এসেছে। মীমের অজ্ঞাতসারে স্বর্না কী যেন নিজের রুমে নিয়ে গেলেন। একটু পরেই মীম রেডি হয়ে ভার্সিটি চলে গেল। এদিকে স্বর্ণাও বিশাল এক বস্তা টাইপের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন শায়েস্তানগরের দিকে। সারাদিন ঘুরে অনেক রকমের ফলমূল নিয়ে বাসায় ফিরলেন। সন্ধ্যায় মীম বাসায় এসে জানতে পারে শুভর প্রচণ্ড জ্বর। মা শুভর খাটের পাশে মেঝেতে বসা।

‘হঠাৎ কী হলো মা?’

‘ওসব তেমন কিছু না। সেরে যাবে নে।’

ছেলের অসুস্থতায় মায়ের মনে যেন চিন্তার কোনো ছাপ নেই। পেটে খাবার নেই কারোর। কর্তা শহরের বাইরে গেছেন। রাতে মীম বেগুন ভাজা আর ডাল রান্না করল। স্বর্ণা ফোনে কথা বলছেন। ভাবভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছে বিশেষ কোনো আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। ফোনশেষে আবার দরজার কাছে এসে শুভর স্যুপ খাওয়া দেখলেন। মায়ের এমন আচরণে তারা দুজনেই বিচলিত। স্বর্ণা শুভর মুখের দিকে তাকিয়েই বলছেন—‘কাল থেকে লতিফা আবার কাজে আসবে রে। আমি সকালে আখাইলা যাচ্ছি।’

‘বাবা বাসায় নেই। তাছাড়া শুভ অসুস্থ। আমি কাজে গেলে ওর দেখাশোনা?’

‘যেয়ো না কাজে।’

‘এমন আত্মকেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা তোমার মাথায় আসে কী করে মা?’

‘আমি তো আর রংতামাশা করতে যাচ্ছি না। কাজ আছে।’

‘থাকগে কাজ। এই সময়ে যাওয়া উচিত না তোমার।’

মীম আর কথা বাড়াতে দিল না। রাত প্রায় ১২টার দিকে স্বর্ণা খাওয়া শেষ করে রান্নাঘরের টুকটাক কাজ করতে লাগলেন। পরদিন সকাল ৭টায় লতিফা এসে কলিংবেল বাজাচ্ছে। মীম ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলে দিল।

স্বর্ণা বেগম বাসায় নেই। শুভর মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে আছে লতিফা। একটু পর পর বলছে—‘চা এনে দিই লক্ষীটি? আদা দিয়ে চা খেলে ভালো লাগবে।’

সাড়ে আটটায় বাস আসবে। স্বর্ণা বাসা থেকে নাস্তা করে এসেছেন। সঙ্গীদের সাথে হালকা একটু আলাপ করে নিচ্ছেন। ৮টা ২০-এ বাস এল। ১১ জন যাত্রী উঠল।

ওদিকে শুভ জ্বরে থরথর কাঁপছে। মীম তার খালুর ফার্মেসিতে ফোন দিয়ে সমস্যার কথা জানাল। একটু পরে লতিফা গিয়ে ঔষুধপত্র এবং মাছ নিয়ে বাসায় ফিরল। সন্ধ্যার দিকে জুনায়েদ সাহেব বাসায় আসলেন। মীম রাতের খাবারের আয়োজনে ব্যস্ত। ততক্ষণে লতিফা চলে গেছে। ছেলের কাছে গিয়ে বসলেন তিনি। এখন জ্বরের মাত্রা কম। একটু পর পর কাশছে। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। জুনায়েদ সাহেব আবার ছুটে গেলেন নিজের কাজে। কিন্তু মিনিট দশেকের মধ্যে আবার কী মনে করে বাসায় ফিরলেন।

মীম গিয়ে বলল, ‘বাবা, ফ্রেশ হয়ে নাও। তিনজন একসাথে খাবো, কেমন?’

‘হ্যাঁ, আসছি।’

শুভ নিত্যদিনের মতোই হাজার রকম গল্প শোনাচ্ছে।

‘বাবা, সিক্সে উঠলে আমি কিন্তু মাদরাসায় পড়ব। সাজু ভাইয়ের মাদরাসায়। একসাথে যাব দুজনে। বলে দিলাম আমি…’

মীম কিছু একটা নিয়ে চিন্তিত। মায়ের ফোন বন্ধ। হঠাৎই উঠে চলে গেল রুমে। স্বর্ণার ফোনে বারবার রিং হচ্ছে। ওপাশ থেকে কেউ ওঠাচ্ছে না। আবার গিয়ে বসল টেবিলে। শুভকে ডাকল। শুভ আসছে না। হয়তো ঘুমাচ্ছে। খাবারগুলো রান্নাঘরে নিয়ে রেখে আবার ফোন হাতে নিয়ে বিছানায় নেতিয়ে পড়ল।

ফোন বাজছে। স্ক্রিনে ‘বাবা’ লেখা দেখাচ্ছে। বাবা তো দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ডাকছেন। তড়িঘড়ি করে উঠে দরজা খুলল।

‘বাবা, সাতসকালে উঠে গেলে যে?’

‘এদিকে আয়, দেখে যা রে।’

জুনায়েদ সাহেব নিজের রুমের দিকে এগুচ্ছেন। মীম পিছে ছোট ছোট কদমে হাঁটছে। গিয়ে শুভর পায়ের কাছে দাঁড়াল সে।

‘দেখ তো মা, আমার শুভ কথা বলছে না কেন!’

‘আরে বাবা, ভালোমতো ডাকবা তো তুমি। কিছু হয়নি। দাঁড়াও আমি খালুকে ফোন দিচ্ছি।”

পুরো ঘরজুড়ে গভীর নিস্তব্ধতা। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে কলিংবেল বেজে উঠল। মীম দরজা খুলতেই দেখলো স্বর্ণা দাঁড়িয়ে। মুচকি হাসি দিয়ে শিরনির প্যাকেট এগিয়ে দিল।

‘তোর বাবা এসেছেন বুঝি? উরসে গিয়েছিলাম বুঝলি? তোরা জানলে তো যেতে দিতি না। এ-বছর কীভাবে যেন সময়-সুযোগমতো উনি বাসার বাইরে ছিলেন।’

ডা. কামরুলকে আসতে দেখে মীম ব্যাকুল হয়ে উঠল। সিঁড়ির কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে এগিয়ে আনতে আনতে বলল, ‘খালু, ও খালু, শোনেন না। শুভ কেমন জানি কথা বলছে না। আসেন না দেখেন তাড়াতাড়ি।’

সবাই ছুটে গেল শুভর কাছে। দুই মিনিটের মাথায় জানা গেল শুভ সংসারের সব মায়া ত্যাগ করেছে।

স্বর্ণা শুভর মাথায় চুমু খাচ্ছেন বারবার। জুনায়েদ সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন নীরবে। মীম বারবার প্রতিবেশীদের বলছে—‘বিশ্বাস করো, আমার ভাইয়ের কিচ্ছু হয়নি। বিশ্বাস করো সে ঘুমিয়ে আছে। এই তো সে ঘুমিয়ে আছে।’

আসলেই কি ঘুমিয়ে আছে?

শিক্ষার্থী, নবিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ

জানুয়ারি ২০২২

ShareTweet

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist