নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

টেম্পল অব প্রফেট সুলাইমানঃ ইহুদিবাদের অভিনব প্রতারণা 

নাজমুস সাকিব

টেম্পল অব প্রফেট সুলাইমানঃ ইহুদিবাদের অভিনব প্রতারণা 
Share on FacebookShare on Twitter

২০০১ সালের জুন মাসের দিকে একটি পাথর ফলকের সন্ধান পাওয়া যায় ইসরাইলে। সারা বিশ্বে তখন তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয় পাথরখন্ডটি ঘিরে। কারণ এই পাথরটি ছিল প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন যা ইহুদিদের অতি কাক্সিক্ষত টেম্পল অফ সুলাইমানের অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে। এর আগ পর্যন্ত জেরুসালেমে মসজিদুল আকসার সীমানার ভেতরে যে টে¤পল অফ সুলাইমানের দাবি ইহুদিরা করে আসছিল তা ছিল সম্পূর্ণ ধর্মগ্রন্থভিত্তিক।

তাই হঠাৎ করে আবিষ্কৃত এই ফলকটি ইহুদিদের যেমন আলোড়িত করে তেমন সাড়া ফেলে গোটা বিশ্বে।  পৃথিবীর প্রত্নতাত্ত্বিক ও ইতিহাসবিদদের কাছে এটি ছিল আশ্চর্যজনক একটি ঘটনা।

পাথরটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন একদল বিজ্ঞানী। পাথর খন্ডের ওপর প্রাচীন হিব্রু ভাষায় কিছু লেখা ছিল। দীর্ঘদিন অনুসন্ধান ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁরা পাথরটি তিন হাজার বছরেরও বেশি পুরনো বলে ঘোষণা দেন। সাথে সাথে এটি মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম একটি প্রামাণ্য দলিল বলেও উল্লেখ করেন।

তোলপাড় সৃষ্টি হয় পৃথিবী জুড়ে। পাথরটি এবং তার ওপর লিখিত তথ্য পৃথিবী এবং মানব জাতির ইতিহাসকে ওলট পালট করে দেয়। ইতিহাসবিদরা আবার  নতুন করে গবেষণার প্রয়োজন বোধ করেন।

ঘটনার শুরু হয়েছিল বেশ রহস্যজনকভাবে। ইসরাইলের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত নবীন প্রফেসরের কাছে অপরিচিত এক ব্যাক্তি ফোন করেন। নিজেকে একজন প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষক পরিচয় দিয়ে ওই ব্যাক্তি বলেন, তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন পাথরের সন্ধান পেয়েছেন। আরেকজন  প্রবীণ প্রফেসরের নাম বলে ফোনকারী নবীন প্রফেসরের কাছে আকুতি জানান, তিনি যেন প্রবীণ প্রফেসরের সাথে তাঁকে দেখা করিয়ে দেন। ওই গবেষকের কথায় নবীন প্রফেসর সম্মত হন।

হাতে একটি ব্যাগ নিয়ে প্রবীণ অধ্যাপকের অফিসে হাজির হন ওই গবেষক। ব্যাগ থেকে পাথরটি বের করেন। পাথর খন্ডের গায়ে স্পষ্ট অক্ষরে প্রাচীন হিব্রু লেখা দেখে অধ্যাপক এবং তার সহকারী হতবাক হয়ে যান।

অধ্যাপক তখন ওই ব্যাক্তির পরিচয় জানার চেয়ে পাথরেরহস্য উদ্ধারে বেশি মনোযোগী হন। পাথরখণ্ডে খোদাই করে যা লেখা ছিল পৃথিবীর হাজার বছরের ইতিহাসের কাছে তা বিরাট বিস্ময়। তাওরাতে নবি সুলাইমানের যে প্রাসাদের কথা বলা হয়েছে তার বিবরণ আছে পাথরের গায়ে। ইতিহাস, ধর্ম, বিজ্ঞান ও প্রতœতত্ত¡বিদদের হাজার বছরের প্রশ্নের জবাব যেন লুকিয়ে ছিল এই লেখায়।

তাওরাতের বর্ণনা থেকে জনা যায়, প্রায় তিন হাজার বছর আগে সুলাইমান আলায়হিস সালাম জেরুসালেমে এই প্রাসাদ  নির্মাণ করেন। এরপর তিনি একে আল্লাহর ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট স্থান হিসেবে ঘোষণা করেন। তাওরাতে এই প্রাসাদের বিস্তারিত বর্ণনা আছে।

তাওরাতে বর্ণিত আছে, প্রাসাদটির প্রধান অংশের চারপাশের দেয়াল মূল্যবান আরয কাঠ দিয়ে জড়ানো। কাঠের মধ্যে দামি স্বর্ণের কারুকাজ। ভেতরে পাখাবিশিষ্ট স্বর্ণের দুটি মূর্তি। মূর্তি দুটি ফেরেশতাদের আকৃতিতে তৈরি।

প্রাসাদ নির্মাণের পর সর্বপ্রথম নবি সুলাইমান ইহুদি ধর্মের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন ‘তাবুত আল আহদ’ প্রাসাদের ভেতর স্থাপন করেন। ইহুদিদের বিশ্বাস অনুযায়ী তাবুত আল আহদ মূলত একটি সিন্দুক। এতে রয়েছে স্রষ্টার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ পাথরে খোদাইকৃত নির্দেশাবলি। ইহুদিদের কাছে এই নির্দেশাবলি ‘দশটি প্রতিশ্রুতি’ নামে পরিচিত।

তাওরাতের বর্ণনা মতে, নবি সুলাইমানের এই প্রাসাদ ঈসা আলায়হিস সালামের জন্মের প্রায় এক হাজার বছর আগ পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল। এরপর খৃষ্টপূর্ব ৫৮৬ সালে বাবেলের সম্রাট নেবুচাদনেজারের সৈন্যরা এটি ধ্বংস করে দেয়।

সুলাইমান আলায়হিস সালাম ছিলেন একজন নবি এবং বাদশাহ। তাঁর মতো সাম্রাজ্যের অধিকারী তাঁর আগে বা পরে কেউ হতে পারেনি। তবু এর রাজত্ব অথবা তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো নিদর্শন এতদিন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে তাওরাতে শুধু তাঁর এই প্রাসাদের কথা উল্লেখ আছে। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী সুলাইমান আলায়হিস সালামের এই প্রাসাদটি ছিল আল-কুদসের মধ্যভাগে। বর্তমানে সেখানে মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আকসা অবস্থিত।

তবে আল-আকসার পশ্চিম দিকের দেয়ালটিকে ইহুদিরা সুলাইমান আলায়হিস সালামের প্রাসাদের অংশ মনে করে থাকে। এই দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে তারা প্রার্থনা করে। যদিও ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে এটি প্রমাণিত যে, এই দেয়ালটি সুলাইমান আলায়হিস সালামের মৃত্যুর প্রায় এক হাজার বছর পর নির্মাণ করা হয়।

যেহেতু তাওরাত ছাড়া সুলাইমান আলায়হিস সালামের এই প্রাসাদের আর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না তাই প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাসাদটির অস্তিত্ব আছে বলে স্বীকার করেননি। এই পাথরটি তাদেরকেও বেশ ভাবিয়ে তোলে।

কুদসে একটি হোটেলের কক্ষ থেকে আবিষ্কারের কয়েক মাস পর পাথরখÐটি সেই গবেষক ইসরায়েলের একটি বিখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসেন। এটি ছিল একটি  প্রত্নতত্ত্ব ও ভূ-তত্ত্ব গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা পাথখÐটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। প্রাথমিক গবেষণার পর তাঁরা জানান, পাথরটির রঙ মূলত ছিল কালো। এ ছাড়া একই সময়ের আরেকটি পাথর ওই প্রত্নতত্ত্ববিদের কাছে সংরক্ষিত ছিল।

পাথরের গায়ে খোদাই করা লিপি অর্থোদ্ধার করে দেখা যায়, এই লিপিতে সুলাইমান আলায়হিস সালামের প্রাসাদের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কথা উল্লেখ রয়েছে। প্রাচীন হিব্রুতে লেখা এই লিপি মূলত একজন বাদশাহর বক্তব্য। তাঁর নাম ছিল যিহওয়াশ। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সুলাইমান আলায়হিস সালামের সময়ের প্রায় একশ বছর পর তিনি এই অঞ্চলের বাদশাহ হয়েছিলেন।

পবিত্র ইঞ্জিলেও এই ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। সেখানে একজন বাদশাহর কথা উল্লেখ আছে যিনি সুলাইমান আলায়হিস সালামের পর প্রাসাদটির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষন করেছিলেন।

ইঞ্জিলে উল্লেখ আছে, যিহওয়াশ তাঁর দরবারের গণকদের বলেছিলেন আল্লাহর ঘরে (প্রাসাদ) মানুষ যেসব ধন-সম্পদ দান করেছে সেগুলো একত্র করতে। তিনি এগুলো পবিত্র এই ঘরের জন্য ব্যয় করবেন।

ঠিক একই বর্ণনা রয়েছে পাথরের গায়ে। সেখানে লেখা আছে, ‘আমি যিহওয়াশ, আহাযিয়ার পুত্র। ইহুদিদের ভূখণ্ডের অধিপতি। আমি এই  প্রাসাদের সংস্কার করেছি। প্রাসাদের চারপাশে দেয়াল নির্মাণ এবং ভেতরের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করেছি।’

ইঞ্জিল এবং পাথরের গায়ে লেখা বিবরণ যে একই ঘটনার সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়তা প্রকাশ করেন। এতে করে পাথরটি আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্থার কর্মকর্তারা তখনও দ্বিধায়। পাথরটির সত্যতা প্রমাণের জন্য আরো কিছু খুঁজছিলেন তাঁরা। সেজন্য তাঁদের অনুসন্ধান অব্যাহত থাকে।

ধর্মগ্রন্থ ও ঐতিহাসিকদের কাছে পাথরটির সত্যতা প্রমাণের পর তাঁরা পাথরটির রাসায়নিক পরীক্ষা শুরু করেন। প্রথমে কাজ শুরু করেন পাথরটির ওপর জমে থাকা কালো স্তর নিয়ে। এই স্তরটি কোনো বস্তুর উপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। বাতাসে মিশে থাকা বিভিন্ন পদার্থ আর পাথরের ওপরের স্তরের সাথে দীর্ঘ দিনের বিক্রিয়ায় এই কালো স্তরটি গঠিত হয়। ধীরে ধীরে তা বাদামি বর্ণ ধারণ করে। বাতাসের মাধ্যমে এই স্তর তৈরি হতে প্রায় হাজার বছর লেগে যায়।

বিজ্ঞানীরা পাথরের ওপরের  এই স্তরটি পরীক্ষা করে দেখেন। পাথরে থাকা খোদাইয়ের ভেতরও তাঁরা এই স্তর দেখতে পান। এরপর তারা বাদামি রঙের স্তরটি বিশ্লেষণ করেন। ক্যালসিয়াম কার্বন ও অন্যান্য পদার্থের সাথে বিভিন্ন বিক্রিয়া ঘটিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। এই পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে দেখেন স্তরটি আসলেই কুদস অঞ্চলের বাতাসে থাকা পদাথের্র সাথে মিলে কিনা। তারা প্রতিটি পদার্থ নিয়ে আলাদা আলাদা গবেষণা চালান।

গবেষণার পর তাঁরা যে রিপোর্টটি তৈরি করেন তাতে বলা হয়, এই পাথরের ওপর জমে থাকা স্তরটি প্রায় ২২০০ থেকে ২৪০০ বছর আগের। সুতরাং পাথরটি যে তিন হাজার বছর আগের তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। এ ছাড়া এতে মিশে থাকা পদার্থগুলো আল-কুদস অঞ্চলের।

এর সাথে আরো একটি রহস্যও তাঁরা আবিষ্কার করেন, যাতে সবাই মেনে নিতে বাধ্য হয় যে, পাথরটি সত্যিই সুলাইমানের প্রাসাদে ছিল। বিজ্ঞানীরা জানান, পাথরটির ভেতর তাঁরা ছোট ছোট স্বর্ণের কণা পেয়েছেন। এতে করে পাথরটি সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহ কারো রইল না। কারণ, তাওরাতে বলা হয়েছে সুলাইমানের প্রাসাদের ভেতর আগুনের মধ্যে রাখা একটি পাথর ছিল। তার চারপাশে ছিল চিকন স্বর্ণের বেষ্টনী। স্বর্ণের কণাগুলো এটাই প্রমাণ করে যে, এটি সেই পাথর। আগুনের তাপে স্বর্ণ গলে পাথরের মধ্যে ঢুকে গেছে।

২০০৩ সালের জানুয়ারি মাসে সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা ঘোষণা দেন যে, পাথরটি আসল। সারাবিশ্বের গণমাধ্যমগুলো ফলাও করে এই সংবাদ প্রচার করে। ইহুদিদের অতি কাক্সিক্ষত সুলাইমানের প্রাসাদের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ পাওয়া যায়। সাথে সাথে ইঞ্জিলের কিছু অংশের ঐতিহাসিক সত্যতা প্রমাণিত হয়। সত্যতা প্রমাণিত হয় ইহুদিদের কাছে পবিত্র স্থান‎ হিসেবে পরিচিত আল কুদসের পশ্চিম দেয়ালের। বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয় পাথরটি নিয়ে।

এরপর পাথরটির একটি উপযুক্ত স্থান নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। অনেক পর্যালোচনার পর তার ঠাঁই হয় ইসরায়েলের জাদুঘরে। জাদুঘরটিতে তাওরাতের সাথে স¤পর্কিত অনেক পুরনো নিদর্শন আগে থেকেই রাখা ছিল। ছিল প্রাচীন নানা পাত্র, মৃত সাগরে পাওয়া তাওরাতের সবচে প্রাচীন লিপি এবং নবি সুলাইমানের যুগের একটি লিপিÑযা দাউদ আলায়হিস সালামের বাড়ির একটি ফলক। নবি দাউদের এটিই একমাত্র প্নিরত্দনতাত্র্শত্নবিক। পাথরটির জন্য তাঁরা এ জাদুঘরকেই উপযুক্ত স্থান হিসেবে নির্বাচন করেন।

জাদুঘরে পাথরটিকে নিলামে ওঠানো হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ক্রেতারা দাম হাঁকাতে থাকেন। তিন মিলিয়ন থেকে শুরু করে দশ মিলিয়ন পর্যন্ত দাম ওঠে পাথরটির।

তবে বিক্রির আগে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ পাথরটি ঠিক কোথায় পাওয়া গিয়েছিল তা ভালো করে জানার আগ্রহ প্রকাশ  করে। তাওরাতের বর্ণনা অনুযায়ী জানা যায় আল-আকসার স্থানেই ছিল সুলাইমানের সেই প্রাসাদ। কিন্তু আল-আকসায় পাথরটি পাওয়া গেছে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। কারণ, আল-আকসা গত কয়েক শতাব্দী ধরে মুসলমানদের পবিত্র স্থান। সেখানে কোনো খোঁড়াখুড়ি করা হয়নি। তা ছাড়া এমন প্রাচীন নিদর্শন কোথাও পাওয়া গেলে সাথে অন্য কোনো চিহ্ন অবশ্যই পাওয়া যাওয়ার কথা।

জাদুঘর কর্তৃপক্ষ যখন পাথরটির প্রাপ্তিস্থান নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন, তখন পাথরটি কোথায় পাওয়া গিয়েছিল তারচে পাথরটি কীভাবে সেই গবেষকের হাতে এল সে বিষয়ে জানতে তাঁরা বেশি আগ্রহ প্রকাশ করেন। তখনই ঘটে বিপত্তি। সেই গবেষক তখন লাপাত্তা হয়ে যান। তাঁর পরিচয় বা ঠিকানা কোনোকিছুই কেউ এতদিন সংরক্ষণের প্রয়োজন মনে করেনি। তাঁকে বের করার জন্য আমির গেনোর নামে এক সরকারি প্রতœতাত্তি¡ক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

এরপর প্রায় ৯ মাস ধরে গাড়ি চালিয়ে সারা ইসরাইল চষে বেড়ান ওই কর্মকর্তা। অবশেষে দেখা মেলে সেই  গবেষকের। রামাদগানে এক অফিসে তাঁকে পাওয়া যায়। গবেষক নিজেকে ওয়াদেদ গোলা নামক এক ব্যাক্তির কর্মচারী বলে পরিচয় দেন।

ওয়াদেদ গোলান ইসরাইলের একজন বিখ্যাত পুরাকীর্তি সংগ্রাহক। তাঁর পরিচয় সরকারি কর্মকর্তার অজানা ছিল না। পাথরটির বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াদেদ গোলা বলেন, পাথরটির মালিক তিনি নন। কে প্রথম এটি খুঁজে পেয়েছে তাও তিনি জানেন না। তিনি শুধু পাথরটি প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছেন।

গোলা বলেন, ১৯৯৯ সালে একজন ফিলিস্তিনি ব্যবসায়ী তাঁর সাথে যোগাযোগ করেন। ওই ব্যবসায়ী তাঁকে জানান, একটি পুরনো পাথর তিনি বিক্রি করতে চান। এ জন্য ওয়াদেদ গোলার সাহায্য দরকার। ব্যবসায়ী তাঁকে শর্ত দেন পাথরটি যেন ইসরাইলের ভেতরেই বিক্রি করা হয়।

ওয়াদেদ গোলা তাঁকে সাহায্য করতে সম্মত হন। এ জন্য তাঁর এক কর্মচারীর মাধ্যমে পরীক্ষার জন্য পাথরটি তিনি বিজ্ঞানীদের কাছে পাঠান।

এর মধ্যে সেই ফিলস্তিনি মারা যান। সেই ফিলিস্তিনি তার পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। তাই তাঁর সম্পর্কে গোলা আর  কিছু জানতে পারেননি। তবে তিনি পাথরটি কোথায় পাওয়া গিয়েছিল তা জানান। গোলা জানান, পাথরটি পাওয়া যায় আল-কুদসে আল-আকসার বাইরে অবস্থিত একটি করবস্থানে। অতি প্রাচীন ভাঙা একটি কবরের ভেতর ছিল পাথরটি।

এরপর কিছুদিন কেটে যায়। হঠাৎ আরেকটি ঘটনায় আবার আলোচনা শুরু হয় বিশ্বজুড়ে। ২০০২ সালে আরেকটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। এটি ছিল মৃতদের জন্য তোইরি পাথরের কফিন। পাথর দিয়ে তৈরি এমন বাক্স ইহুদিরা ব্যবহার করত। জেরুসালেম ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে এমন বাক্সে ঢুকিয়ে দাফন করা হত মৃতদের। এ রকম অনেক বাক্স বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে পাওয়া গেছে।

এই পাথরের বাক্সের গায়েও খোদাই করা লিপি ছিল, যার কারণে বাক্সটি অনেক গুরুত্ব¡পূর্ণ হয়ে ওঠে। সেখানে লেখা ছিল, ‘জেমস, ইউসুফের পুত্র এবং ঈসার ভাই।’

এখানে কোন জেমস-এর কথা বলা হয়েছে তা নিয়ে ইতিহাসবিদরা সন্দিহান ছিলেন। তবে ঈসা বলতে যে নবি ঈসার কথা বলা হয়েছে তা ছিল নিশ্চিত।

প্রতœতাত্তি¡করা এই বাক্সটিকে ঈসা আলায়হিস সালামের প্রথম প্রতœতাত্তি¡ক প্রমাণ বলে অভিহিত করেন। আবারো তোলপাড় শুরু হয় বিশ্বজুড়ে। গণমাধ্যমগুলোতে আলোচনা আর তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। যীশুর নাম খচিত থাকায় বাক্সটি একনজর দেখার জন্য আকুল হয়ে যান খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীসহ নানা ধর্মের মানুষ। কানাডার ওন্টারিওতে বাক্সটির একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। লক্ষ লক্ষ মানুষ বাক্সটি দেখতে সেখানে ভিড় করেন।

অবাক করার বিষয় হলো এই বাক্সটির মালিক ছিলেন ওয়াদেদ গোলান। কয়েকবছর আগে পাওয়া সেই পাথরটির মালিক। এবার ইসরাইলি সরকার ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা করা কিছুটা সন্দেহ প্রকাশ করেন। এত প্রাচীন এবং দুর্লভ নিদর্শন সব গোলানের কাছে কোত্থেকে এল? হাজার হাজার বছর ধরে এর কোনো সন্ধান কেন পাওয়া গেল না? নানা প্রশ্ন তখন সন্দিহান করে তোলে প্রত্নতাত্ত্বিকদের।

এরপর একদিন হঠাৎ তল্লাশি চালানো হয় গোলানের বাড়িতে। যীশুর নাম খচিত আরেকটি কফিন তখন পাওয়া যায় গোলানের বাড়ির বাথরুমে। সেখানে পানি জমিয়ে রাখা হয়েছিল। আর পাথরের ফলকটি পাওয়া যায় তার টেবিলের ওপর অযত্নে পড়ে থাকা অবস্থায়।

ধীরে ধীরে সন্দেহ আরো ঘনীভূত হয়। পাথরের ফলকটি আবারও পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এর দায়িত্ব দেয়া হয় বিখ্যাত ইসরাইলি বিজ্ঞানী ভিক্টর হারাওয়েটজকে।

ভিক্টর নতুন করে পাথরখন্ডের লেখাটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি লেখাটি পড়তে গিয়ে একটি শব্দে ত্রুটি খুঁজে পান। পাথরের গায়ে থাকা লিপিটি লেখা হয়েছিল প্রাচীন হিব্রুতে। তাওরাতের মতো ভাষা ছিল লেখাটির। কিন্তু একটি শব্দে বিপত্তি ঘটেছে।

পাথরে লেখা ছিল ‘আমি এই প্রাসাদটির রক্ষণাবেক্ষবণের জন্য দেয়াল নির্মাণ করলাম। নির্মাণ শব্দের হিব্রু লেখা হয়েছে ‘বেদেকাবায়েদ’। কিন্তু শব্দটি আধুনিক হিব্রু ‘নির্মাণ’ বোঝালেও প্রাচীন হিব্রু বোঝায় ‘ধ্বংস করা’।

এভাবে প্রাচীন ভাষায় লেখা লিপিটির অর্থ দাঁড়ায়, ‘প্রাসাদটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য আমি দেয়াল ধ্বংস করলাম।’ এতেপুরো বক্তব্য উল্টে যায়।

ভিক্টর হারাওয়েটজের এই ব্যাখ্যার সাথে কেউ কেউ একমত হতে পারেননি। তবে তাঁরা পাথরটির প্রাপ্তিস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য না থাকায় পাথরটির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁদের মতে, এ ধরণের পাথর এমনি পাওয়া সম্ভব না। প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুড়ি বা অনুসন্ধানের প্রয়োজন। জেরুসালেমে এমন খোঁড়াখুঁড়ি কখনো হয়নি।

পাথরটির সত্যতা নিশ্চিত  হওয়ার জন্য শুধু এই ভাষাগত ভুল যথেষ্ট ছিল না। পাথরের গায়ে জমে থাকা পুরু স্তর আবারও পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

লিসা নামের এক বিজ্ঞানী আবারও রাসায়নিক পরীক্ষা চালান। এবারও দেখা যায় পাথরটি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগের। এরপর তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ইউভাল গোরেন নামের একজন প্রফেসরকে। তিনি ইসরায়েলের একজন বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ ও বিজ্ঞানী।

প্রফেসর পাথরের পেছনের স্তর নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। তিনি দেখতে পান পেছনের স্তর সিলিকন ও সিলিকন ডাই অক্সাইড দিয়ে গঠিত। অথচ আল-কুদসের আবহাওয়ায় এমন গঠন সম্ভব না। তিনি পাথরের পেছনের উপাদানগুলো আরো বিশ্লেষণ করে দেখতে পান কণাগুলো আল-কুদস অঞ্চলের। এরপর তিনি সামনের  খোদাইয়ের ভেতর থেকে কণা নিয়ে পরীক্ষা করেন। এই পরীক্ষার ফলাফল ছিল আরো বেশি অবাক হওয়ার মতো।

পাথরের খোদাইয়ের ভেতর তিনি যেসব কণা দেখতে পান সেগুলো সমুদ্রের তলদেশের কণা। পাথরের পেছনের দিকের কণার স¤পূর্ণ বিপরীত। সামনের দিকের কণাগুলো গঠিত হয়েছে সমুদ্রের তলদেশে আর পেছনের দিকের কণাগুলো স্থলভাগের। এ ছাড়া তিনি খোদাই করা লিপির ভেতর সুঁই বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রের দাগ দেখতে পান যেগুলো দেখে বোঝা যায় পাথরের লেখাগুলো খুব বেশিদিন আগের নয়।

সবকিছু কেমন যেন মিলে যাচ্ছিল। ভিন্ন রকমের পাথর কণা, যন্ত্রের দাগ সব মিলিয়ে প্রমাণিত হচ্ছিল পাথরের স্তরটি স্বাভাবিক নয়। এরপর প্রফেসর গোরেন জেমসের কফিনটি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। দেখা যায় কফিনের গায়ে থাকা লিপিও কোনো যন্ত্র দিয়ে করা হয়েছে। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেন যে পাথর ও কফিনের গায়ে থাকা লিপি নকল।

এরপর একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। যীশু ও সুলাইমানের প্রাসাদের অস্তিত্বের  প্রমাণ বলে ঘোষণা দেয়া নিদর্শন দুটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়। হতবাক হয়ে যায় সারা বিশ্ব।

এই ঘটনায় ক্ষোভ দেখা দেয় বিশ্বের প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে। বিশেষ করে ইসরাইলের বিজ্ঞানীরা এই ঘটনায় ক্রুদ্ধ হন। এমন ধোঁকাবাজির ঘটনা ভাবিয়ে তোলে সবাইকে। সন্দেহ সৃষ্টি হয় পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে পাওয়া প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো নিয়ে। সেগুলো কি আসল নাকি প্রতারণা এই প্রশ্ন দেখা দেয় সবার মধ্যে।

বিজ্ঞানীরাও অবাক হয়ে যান। এমন নিখুঁত প্রতারণা হতে পারে কেউ ভাবেনি কখনো। তদন্তে মূল ভূমিকা পালনকারী প্রফেসর গোরেন বলেন, ইতিহাস ও বিজ্ঞানকে ভুল প্রমাণ করার জন্য কেউ কেউ এমন অপচেষ্টা করতে পারে। নিজেদের মতামত প্রতিষ্ঠার জন্য এমন প্রতারণা অবাক হওয়ার মতো নয়।

কিন্তু প্রফেসর গোরেন তখনও তাঁর অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিভিন্ন উপাদান দিয়ে পাথরটি কীভাবে বানানো হলো তার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টায় ছিলেন তিনি।

গোরেন আল-কুদসের সমুদ্র অঞ্চলের পাথর কোথা থেকে এল তা জানার জন্য অনুসন্ধান শুরু করেন। ফিলিস্তিনে সমুদ্রের পাড়ে খ্রিস্টানদের নির্মিত পুরনো একটি দূর্গ আছে। সেখানে গিয়ে দূর্গের পাথর তিনি পরীক্ষা করে দেখেন। গোরেনের ধারণা সঠিক প্রমাণিত হয়। দূর্গের পাথরের সাথে মিলে যায় সেই পাথরের কণাগুলো।

পাথরটির আরো রাসায়নিক বিশ্লেষণ করা হয়। পাথরের ভেতর পাওয়া স্বর্ণের কণাগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় এগুলো আধুনিক যুগের স্বর্ণ। পাথর ও কফিনের ওপরের স্তর কীভাবে কৃত্রিম উপায়ে তৈরি করা হয়েছে তারও ব্যাখা দেন বিজ্ঞানীরা। উচ্চ তাপমাত্রায় পাথরটি রেখে দিলে নানা বিক্রিয়া ঘটে এমন স্তর গঠিত হয়ে যায়। কফিন এবং পাথর দুটোই যে নকল তা নিয়ে আর কারো সন্দেহ থাকে না।

এরপর গোলানকে আটক করা হয়। গোলানের অফিস ও বাড়ি তল্লাশি করে পাওয়া যায় অনেক পুরনো মাটি ও পাথর। পাওয়া যায় যন্ত্রপাতি যেগুলো এমন নকল প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন তৈরির কাজে ব্যবহার করা হত। এ ছাড়া পাওয়া যায় পাথরের মূর্তি ও নকল মুদ্রা। যেগুলো দেখে কেউ প্রাচীন নিদর্শন মনে করতে পারে।

সেসব নিদর্শনও পরীক্ষা করা হয় প্রফেসর গোরেনের নেতৃত্বে। দেখা যায় প্রত্যেকটি নিদর্শন নকল এবং কৃত্রিম উপায়ে তৈরি।

এই অপরাধের জন্য শাস্তি হয় গোলান ও তার সঙ্গীদের। তবে চিন্তায় পড়ে যান সারা পৃথিবীর প্রত্নতত্ত্ববিদরা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জাদুঘরে থাকা নানা প্রাচীন নিদর্শনগুলোও কি এমন প্রতারণা? গোলান ও তাঁর সঙ্গীদের থেকে এমন অনেক নিদর্শন ক্রয় করেছে বিভিন্ন দেশের জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। সেগুলো কি তাহলে আসল নয়?

এই ঘটনা একটি প্রশ্নের জন্ম দেয় ঐতিহাসিকদের মধ্যে। পৃথিবীর নানা দেশে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখে লেখা বিভিন্ন ইতিহাস কি তবে ভুল?  আর কোথায় লুকিয়ে আছে এমন প্রতারণা? খুঁজলে হয়তো এমন ঘটনা আরো পাওয়া যাবে। নতুন করে আবার লিখতে হবে পৃথিবীর ইতিহাস।

গোলানের মতো প্রতারকদের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? অর্থের লোভ ছিল এটা তো নিশ্চিত। এছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য কি ছিল?

সুলাইমানের প্রাসাদের অস্তিত্ব নিয়ে ইহুদিদের দাবির স্বপক্ষে তাওরাত ছাড়া আর কোনো প্রমাণ নেই। তাই বিজ্ঞান ও ইতিহাস তাদের এই দাবি অসাড় প্রমাণ করে আসছে। ইহুদি জাতি প্রতারণা ও চক্রান্তে সিদ্ধহস্ত। প্রাসাদের প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ নিয়ে প্রতারণা কি তাদের সেই অভ্যাসের ফল? এতদিন পর যখন দেখি ইসরাইল জেরুসালেমকে তাদের রাজধানী ঘোষণা করে তখন এমন নানা প্রশ্ন খুব স্বাভাবিকভাবে মনে উঁকি দেয়।

আল জাজিরা অবলম্বনে 

ShareTweet

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist