নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

মিরাল : বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখা জেরুসালেম ।। মনযূরুল হক

মিরাল : বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখা জেরুসালেম ।। মনযূরুল হক
Share on FacebookShare on Twitter

Miral is a red flower. it grows on the side of the road.
YouÕve probably seen millions of them…

মিরাল একটি নামই বটে। একটা মেয়ের নাম। ফিলিস্তিনি মেয়ে। কী অর্থ এই নামের? আমরা জানি একটা পিকচার দেখতে গিয়ে এমন প্রশ্ন কেউ করবেন না। কিন্তু একটা ফিলিস্তিন বিষয়ক চলচ্চিত্র, যার পরিচালক ইসরায়েলি, যেই চলচ্চিত্র জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশ্বের রাষ্ট্রনেতাদের সামনে প্রদর্শিত হয়েছে, এমনকি জাতিসংঘে যেন কোনোমতেই দেখানো না হয় সেজন্য দেদার হাঙ্গামাও করেছে ইসরায়েল, তার নাম এবং তার কোনো চরিত্রের নাম শুধু ‘নাম’ হতে পারে নাÑসে আপনি ভালো করেই জানেন ।
সুতরাং তার নামের একটা অর্থ আছে। এই অর্থটা জানার কথা ছবির ঠিক মাঝামাঝির পরের পর্যায়ে এসে। যেখানে মিরাল তার কাজিন সামিরের ইহুদি গার্লফ্রেন্ড লিসার বাড়িতে বেড়াতে যায় এবং লিসার মিলিটারি বাবা মিরালকে জিজ্ঞেস করেনÑ‘মিরাল, হোয়াট কাইন্ড অব আ নেইম ইজ দ্যাট?’ কিন্তু পরিচালক শুরুতেই নাম-টাইটেল দেখানোরও আগে উত্তর জানিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ, কিছুটা ভীতি, কিছুটা সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে মিরাল যেই উত্তর তাকে দিয়েছে, তা ইতোমধ্যে আপনি পড়েছেনÑইট’স নেইম অব দ্য রেড ফ্লাওয়ার…যা পথের পাশে জন্মে। আপনি সম্ভবত তেমন লাখো ফুল দেখেছেন। মিরাল আরও যোগ করেÑযদিও নামটি পার্সি, কিন্তু আমি একজন ফিলিস্তিনি।
মিরাল একজন ফিলিস্তিনি মেয়ে। তাহলে ইসরায়েলি সেনাকে ভয় পাওয়ার কথা নয় তার। কিন্তু মিরাল লিসার বাবাকে ভয় পেয়েছে। লিসাকে বলেছে, এক্ষুণি তাকে জেরুসালেম যেতে হবে। এই ভয়, সেই ইন্টারগেশন সেলের ভয়। যেখানে মিরাল জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যখানে ওয়াশরুমে যাবারও অনুমতি পায় নি। তাই তার জিন্সপ্যান্ট ভিজে হলুদ ¯্রাব বেরিয়ে প্রমাণ করে গোটা ইসরায়েল টয়লেটের মতোই অপবিত্র ।
আর ওই ‘মিরাল ফুল’গাছই কি মিরাল তার বাবার সাথে মসজিদে আকসার দরোজাপথের কেয়ারিতে লাগিয়েছিলো? যখন সে খুব ছোটো ছিলো? তার বাবা আকসার ইমাম। আচ্ছা, তিনিই কি মিরালের বাবা? মিরাল কি একটি পবিত্র মহিমান্বিত মসজিদের ইমামের মেয়ে হতে পারে? আমরা জানি, এই প্রশ্ন শুরুতেই আপনার মনে জাগবে। লেখক সম্ভবত সে-বিষয়েও সচেতন ছিলেন ।
এইভাবে অজ¯্র অনিকেত প্রশ্ন আর তার সরল সাদামাটা জবাবের দৃশ্যায়ন দিয়ে তৈরি হয়েছে মিরাল। যদিও মিরাল থেকেই এই কাহিনীর সূচনা হয় নি। কেননা, ১৯৯৪ সালে, ‘অসলো চুক্তি’র এক বছর পরে মিরাল যখন একটা স্কলারশিপ নিয়ে ইতালির পথে রওয়ানা হয়, তখনও তার বয়স মাত্র বিশ । কিন্তু ফিলিস্তিনের বয়স তো বিশ নয়, আরও বেশি। কতবেশি তা নির্ধারণ করা না গেলেও এই পবিত্র ভূখÐে অশান্তির বয়স বের করা কঠিন নয়Ñ১৯৪৮; যেদিন বেলফোর ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ উপনিবেশের যবনিকা হয় এবং জায়নবাদি ইহুদিরা সুদূর জার্মান-রাশিয়া থেকে উড়ে এসে এই মাটিকে রক্তরাঙা করার কসম খায়, সেদিন থেকে। সুতরাং এই ছবির সূচনা আরও এক বছর আগে ১৯৪৭ থেকে।
খুবই সাধারণ সূচনা। অনেকটা ১৯৪৭ সালের আগে ভারত বিভাগের মতো গল্প। যেখানে আরব মুসলিম, ক্রিশ্চিয়ান, জিউস কমিনিউনিটি পরস্পর বন্ধুর মতো আনন্দমুখর হয়ে তাদের ধর্মীয় উৎসবগুলি পালন করে। সেখানে হিন্দ হুসেইন, এক অভিজাত মুসলিমকে ক্রিশ্চিয়ান কমিউনিটির ধন্যবাদ পেতে দেখা যায়। তারপরই আসে ১৪ মে ’৪৮, ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণা। আসে নির্বিচারে বোম্বিং, ইতিহাসে যা কুখ্যাত দার ইয়াসিন গণহত্যা নামে পরিচিত। সুতরাং পরিণতিতে অজ¯্র শিশু নিঃস্ব এতিম হয়ে পড়ে। তাদের মায়েরা প্রথমেই তাদের বাড়ির খিড়কি পথে বাইরে বের করে দেয়। যারা জেরুসালেমের আকসার গলিতে এসে জড়ো হয়। বাড়ি ফেরার পথে তেমনি ৫৫টি ক্ষুদে শিশুকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন হিন্দ হুসেইনি এবং তাদের কুড়িয়ে এনে প্রথমে নিজের মায়ের বাড়িতে পরে দাদার বাড়ির সুবিশাল সম্পত্তিজুড়ে ‘দারুত তিফল’ গড়ে তোলেন ।
একেবারেই সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এই ছবির স্ক্রিপ্ট। আর সেই স্ক্রিপ্টও তৈরি হয়েছে ফিলিস্তিনি কন্যা ‘রুলা জিবরিল’-এর আলোড়ন তোলা উপন্যাস ‘মিরাল’ (২০০৩) অবলম্বনে। তার চেয়েও আশ্চর্যের কথা হলো, এই ছবিতে প্রচ্ছন্নভাবে জিবরিল তার জীবনের কথাই বলতে চেয়েছেন। তার বাবা ছিলেন মসজিদে আকসার একজন ইমাম, আর তার মা হতাশাক্লান্ত শেষমেষ সমুদ্র সলিলে আত্মহুতি দেন। তিনি হিন্দ হুসেইনির গড়া দারুত তিফলেই লেখাপড়া করেন এবং তাকেই ‘মা’ ডাকতেন। এমনকি তিনি নিজেই ইসরায়েল ও ইতালি ডুয়েল সিটিজেনশিপ পেয়েছেন। সবই তার বই এবং ছবিতে উঠে এসেছে ‘মিরাল’ হয়ে ।
মিরাল, মুক্তি পেয়েছে ২০১১ সালে। আমেরিকায় জন্ম নেওয়া পরিচালক জুলিয়ান শ্নাবেল (যিনি ‘বিফোর নাইট ফলস’ মুভির কারণে এরই মধ্যে কান ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন) এই ছবির মাধ্যমে বলেছেন ইতিহাসের গলি ঘুপচিতে পড়ে থাকা ইসরায়েল ভূখÐের আসল ইতিহাস ও চলমান যুদ্ধের কথা। বলেছেন মিস হিন্দ হুসেইনির স্বপ্নের কথা, স্বাধীন ফিলিস্তিনের স্বপ্নের কথা আর মিরাল নামে এক তরুণীর কথা যার দু’চোখে আগামির আলোঝরা স্বপ্ন খেলা করে। মিরালের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ‘¯ø্যামডগ মিলিওনিয়ার’ খ্যাত অভিনেত্রী ফ্রিদা পিন্টো।
যদিও চলচ্চিত্রটির চরিত্র অনেক, বেশ কিছু ঘটনা এগিয়েছে সমান্তরালভাবে, এক পর্বত শিখর থেকে উৎপন্ন হওয়া জলধারা যেমন সমতলে শতভাগ হয়ে ভিন্ন ভিন্ন দিকে বয়ে যায়, মাঝে মাঝে আবার তাদের দেখা হয়েও যায়, ঠিক তেমন করে। এখানে জেগে উঠেছে মিরালের মা নাদিয়ার কাহিনিÑযে তার সৎ পিতার লালসা থেকে মুক্তি পেতে বেছে নেয় নর্তকীর জীবন । তারপর আরব বলে উপহাস করা এক ইহুদি নারীকে বাসের মধ্যে লোকচক্ষুর সম্মুখে চড় মেরে বরণ করে কারা-গহŸর। পরিচয় হয় প্রাক্তন নার্স তিনটি বিদেশি আরব তরুণকে স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করার অপরাধে তিন তিনটি যাবৎজীবন দÐপ্রাপ্ত ফাতিমার সাথে । ফাতিমারই ভাই জামাল, আকসার ইমাম। মুক্তির পর তার সাথে বিয়ে। কিন্তু ফেলে আসা দুঃসহ স্মৃতি পিছু ছাড়ে না…
তারপর আসে ১৯৮৭, যে বছর শায়েখ ইয়াসিন ‘হামাস’ গঠন করেন, যে বছর ইয়াসির আরাফাত বাংলাদেশ সফর করেন, যে বছর ফিলিস্তিনে রক্তক্ষয়ী ইন্তিফাদার সূচনা হয়, ১৪ বছরের মিরাল জড়িয়ে পড়ে সেই আন্দোলনে। পিএলও’র এক সদস্যের সাথে তার প্রেম, যাকে পরে বিশ্বাসঘাতকার অজুহাতে গুপ্তহত্যার শিকার হতে হয়। হিন্দ হুসেইনির স্বপ্ন ঠিক এই সময় ধরা পড়ে মিরালের চোখেÑস্বাধীনতা আসুক আর না আসুক স্বাধীন জাতি, স্বাধীন মনোবৃত্তি গঠনে শিক্ষাই তাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সারা জীবন সকল সম্পদ ক্ষয় করে এই গোল জিততে চেয়েছেন হিন্দ।
মিরাল শুধু একটি মুভি নয়, আপনি মুভিখোর হলে মুভি দেখার রসালো আস্বাদও হয়তো পাবেন না, কিন্তু মিরালে আছে বাস্তব ফিলিস্তিনের নিপুণ বয়ান। একটি মিলিটারি অকুপাইড দেশের মানুষের মধ্যেও শুধু মানুষ বলেই প্রেম আছে, আনন্দ আছে, ভাষা আছে, তারা কথা বলে, গাইতে ভালোবাসে, বাবার আদর অনুভব করে, বেড়াতে যাবার সুখ পায় এবং এইসবকিছুই সেখানে ঘটে একটি স্বাধীন দেশের মতোই। শুধু পরাধীন হবার কারণে তারা তো ভিনগ্রহের প্রাণী হয়ে যায়নি এবং সবাই যোদ্ধাও নয়, মহামানবও নয়। মিরাল এইসব কথা বলতে চেয়েছে একটা শক্তিশালী দৃশ্যায়নের মধ্য দিয়ে। মনে হবে ’৪৭ থেকে ’১৮Ñমোট সত্তর বছরের ফিলিস্তিনকে অনায়াসে ভরে ফেলা হয়েছে একটি ছোট্ট অ্যাকুরিয়ামে ।
অথবা এ-যেন আকাশের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখা জেরুসালেমের জীবনযাত্রা। যেন-বা তাদের আনন্দ-বেদনা দেখা যাচ্ছে, অনুভবও করা যাচ্ছে, কিন্তু হাত বাড়িয়ে ছোঁয়া যাচ্ছে না ।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন কনফ্লিক্ট কেন্দ্রিক এ পর্যন্ত দুইশতরও বেশি মুভি নির্মিত হয়েছে। গ্রিন ফিল্ড, এইটিন কিলোমিটারস, থার্স্ট ইত্যাদির মতো মুভি বেশ সুনামও কুড়িয়েছে। আজকাল ফিলিস্তিনি মুভি অস্কার মনোনয়ন পাচ্ছে। কিন্তু মিরাল অনন্য। কেননা, এই ছবি শুধু ছবি নয়, ফিলিস্তিন যদি একটি নারী হয়, তাহলে মিরাল তার জরায়ুর কাহিনি।

নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৮ সংখ্যায় প্রকাশিত

ShareTweetShare

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist