নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

শাহাদাতের কোনো মৃত্যু নেই এখানে ।।  হাসিব ইমতিয়াজ

শাহাদাতের কোনো মৃত্যু নেই এখানে ।।  হাসিব ইমতিয়াজ
Share on FacebookShare on Twitter

আমাদের তখন কৈশোর, ওড়াউড়ির দিন। পত্রিকার পাতার নানান বিষয়ে তুমুল আগ্রহ, বিশেষকরে আন্তর্জাতিক বিষয় সমূহে। তখনই শুনি আপনার নাম―মুরসি, মুসলিম ব্রাদারহুড, আরব-বসন্তের নানা আলাপ। আমাদের হাসিতে, আড্ডায়, চোখের চঞ্চল চাহনিতে তখন বিপ্লব। স্বপ্নের ভেতর বিজয়ের শ্লোগান। কল্পনায় ভাসে শুদ্ধতার প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে থাকা ইখওয়ানি তরুণ। আমাদের সুবহে সাদিকের প্রার্থনায় শাহাদাতের বিন¤্র অশ্রæজল। রাত জেগে জেগে নিই বান্না অথবা কুতুবের দ্রোহের পাঠ। আমাদোর ডায়েরির পাতায় মিশরের গল্প, রক্তাত্ত সংগ্রাম। তাহরির স্কয়ারের অনবরত শ্লোগান, শেষ সারিতে প্রতিবাদের ফেস্টুন হাতে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোর, আমাদের প্রেরণা। মাথায় নানা পরিকল্পনা, সূর্য ওঠার পূর্বেই চোখের তারায় জমা করে রাখি অঙ্গীকার। একদিন সন্ধ্যারাতে আমরা জানতে পারি আমাদের স্বপ্নরা এখন আকাশের ঠিকানায় প্রার্থনার মতো বৃষ্টিজল হয়ে আরশে আজিমে। আমরা ভুলে যাই আমাদের রাতজাগার কষ্ট, দেয়ালিকায় সাঁটানো রক্তের দাগ। আমাদের মুখে-মুখে মুরসি আর মিশরের গল্প, প্রত্যাশারা কায়রো হয়ে আকসার পথে। বাতাসের স্রোতে ভাসা আপনার দরাজ কণ্ঠের উচ্চারণ আমাদের স্বপ্নের বৃত্তটা আরেকটু বড় করে দেয় যেন। আমি নিশ্চুপ বিনিদ্র রাতের স্বপ্নগুলো জমা করে রাখি ডায়েরির পাতায়। ভাবি, একদিন আল-আজহারের ফটকে দাঁড়িয়ে সেসব তুলে দেবো আপনার হাতে। আপনি বিহ্বল পড়ে যাবেন আমাদের স্বপ্নমাখা দিন। দূর দেশের এক কিশোরের ভুলভাল উচ্ছ্বাস। তারপর, নানা ঘটনা প্রবাহ রাবেয়া স্কয়ারের রক্তের স্রোতে মিলিত হয়ে প্রবাহিত হয়েছে নতুন এক মোহনায়। ততদিনে আমাদের প্রত্যাশাগুলো বহুদূর আটকে গেছে জালিমের কারাগারে।

দুই
কোনো এক রাতের আলাপে জানতে পারি স্বৈরাচারের বুটের তলায় নিষ্পেষিত আমাদের স্বপ্নের কথা। সবকিছু কেমন এলোমেলো হয়ে গেল আকস্মিক। বিপ্লব, দ্রোহ আর স্বপ্নরা যেন হঠাৎ থমকে দাঁড়াল কিছু সময়। বিহŸল আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম কথা বলার ভাষা। হৃদয়ের অস্থিরতা তখন কাকে দেখাব? সবার চোখই কেমন ঘোলাটে। আশাহত হৃদয় তখন আশা খুঁজে নিয়েছিল সান্ত¡নার ভাষায়―একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। গত পাঁচ বছর আমি আমি ডায়েরির পাতায় তুলে রেখেছি আমার সমস্ত উচ্ছ¡াস। কোথায়, কিছুই তো ঠিক হয়ে যায়নি? সবকিছুই মিথ্যে ছিল। জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতের ভেতরও হঠাৎ করে মনে হয়ে যেত―মুরসি কেমন আছেন? কেমন আছেন জিন্দানখানার ইখওয়ানি তরুণ, তাঁদের বিপ্লবের স্বপ্ন? জালিমের আদালতে আপনার মৃত্যুদÐের কথা শুনেও আমি হতাশ হইনি। ভেবেছি এখনো পৃথিবীর আলো-বাতাস নিয়ে আপনি একজন মানুষ, আমাদের স্বপ্নপুরুষ। আপনার তর্জনির শিল্পিত ইশারা বুকের ভেতর ডেকে আনত শান্ত-সুন্দর এক বিপ্লব। মুখের বিশুদ্ধ উচ্চরণ যেন বিপ্লবপ্রিয় লক্ষ তরুণের হৃদয়ের অনুবাদ। আজও সেসব মুহূর্ত লেপ্টে আছে ডায়েরির উদাসী পৃষ্ঠায়। আমার নানা ভাবনা, পত্রিকার কাটিং, বিপ্লবের খণ্ড-খণ্ড চিত্র পরম মমতায় আগলে রেখেছি বহুদিন। ডায়েরি খুললেই চোখের সম্মুখে বিপ্লব, রাজপথে নেমে আসা শাহাদাতের মিছিল খুব দ্রæত ছুটে যায় ধূসর স্মৃতিরেখায়। এখানে আসমা বেলতাগির ছবি কী হাস্যোজ্জ্বল! এমন হাসতে-হাসতেই হয়তো জীবনের নজরানা পেশ করে দিয়েছিল মেয়েটা। যার বাবা তাকে লিখতে চেয়েছিল, ‘আসমা, বিপ্লব শেষ হয়নি। এটা তো শুরু মাত্র। আমরা হয়তো জিতবো অথবা তোমার মতো শহিদ হবো।’ আসমা ওসব জানতে পারেনি, সে তো তখন জান্নাতের স্বপ্নীল পাখি। মনে পড়ে রাবেয়া স্কয়ারের শহিদ হাবিবার কথা। যে বলেছিল, ‘মা, আমি চলে যাচ্ছি। তুমি ভালো থাকো।’ ডায়েরির পাতা উল্টালে এমন আরও কত মুখ সামনে আসবে কে জানে! হাতটা কেমন অসাড় হয়ে আসে ক্রমশ। সামনে এগুতে ইচ্ছে করে না। এসব তো আর আপনাকে দেখানো হলো না। এমনি আরও কত কত বিপ্লবের গল্প বুকে নিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে গেছেন আপনি। আপনি জান্নাতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখে নেবেন স্বাধীনতার আকাশ, মুরসি।

তিন
আপনার লাশকেও ওরা বাইরে আনতে দেয়নি। নীরবে কায়রোর কোনো কবরে রেখে দিয়েছে রাতের অন্ধকারে। ক্ষমতাসীন জালেমেরা জানে আপনার লাশ বের হলে তাহরির স্কয়ারের পথধরে আবার হেঁটে যাবে বিপ্লবের মিছিল। শোকাহত জনতার অশ্রæজল হয়তো জলোচ্ছ¡াসের মতো আঘাত হানবে স্বৈরাচারের মসনদে। আসলে শহিদানের লাশকেও জালিম ভয় পায় খুব। সাদা কফিনের ভেতর প্রজ্বলিত বিপ্লব জালিমের নিদ্রার ভেতর তুফান নিয়ে আসে ক্রমশ। তবু তারা ভুলে যায় একদিন পরাজয়ের লজ্জিত ইতিহাস। ওরা কি জানে না শহিদরা মরে না কোনোদিন? রক্তের কাছে প্রতিনিয়ত নিতে থাকে মৃত্যুর পাঠ। শাহাদাতের তামান্না বুকে জালিমের রাজপথে ক্রমাগত ছড়িয়ে দিতে থাকে ভোরের আজান। আমাদের সুবহে সাদিকের অশ্রæজল জানে―শহিদরা মরে না, শাহাদাতের কোনো মৃত্যু নেই এখানে। আমরাও প্রস্তুত হতে থাকি। এভাবে তো একদিন সবাই চলে যায়, যাবে। কী বেদনাবিধুর একটা সময়ে দাঁড়িয়ে আমরা। শতাব্দীর স্বর্ণোজ্জ্বল দিনগুলো বুকে নিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের ত্যাগ, লড়াই, রক্তাক্ত সংগ্রাম আমাদের পথ দেখাবে বহুদূর অথবা অতীতের অনেক বিপ্লবের মতো আমরা ভুলে যাবো সবকিছু। আমাদের সম্মুখে কত সংকট, লড়াই, বিচ্যুতি। এর উপর এই শূন্যতা। বুকের ভেতরটা ডুকরে ওঠে অজন্তেই। খাঁ খাঁ রোদে পথ হারিয়ে ফেলে একটা বটবৃক্ষের জন্য মনটা হু হু করে ওঠে। তৃষ্ণাতুর চোখে খুঁজি নদীর শান্ত-স্নিগ্ধ ঢেউ, সমুদ্রের উচ্ছ¡াস কিংবা একটা ছায়াদার বৃক্ষ। চারপাশে অন্ধকার। কোথাও কেউ নেই। জানি, এভাবেই একদিন ফুরোবে আমার বেলা। তবুও আমি বিপ্লব পুষি বুকের ভেতর, যার বীজ থেকে একদিন গজিয়ে উঠবে সুন্দরের চারাগাছ। আমি অপেক্ষা করি শুধু। আমাদের প্রার্থনার অশ্রæজলে মিলেমিশে ওপারে ভালো থাকুন আপনি, মুরসি।

জুলাই, ২০১৯

ShareTweet

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist