নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি
  • হোম
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরানো সংখ্যা
No Result
View All Result
নবধ্বনি

শীত : দুখের মিশেলে সুখের আলাপন ।। মুহাম্মাদ আব্দুল কাদির

শীত : দুখের মিশেলে সুখের আলাপন ।। মুহাম্মাদ আব্দুল কাদির
Share on FacebookShare on Twitter

শিশিরমাখা ভোর। ভোর পেরোয়। সূর্যের আড়মোড়া ভাঙার সঙ্গে করে সকাল আসে ধীর আর অলস পায়ে। কোনোদিন তখনও চোখের আড়াল হতে কুয়াশার চাদরখানা উঠতে চায় না পুরোটা। গাঁয়ের আলপথে কৃষকেরা লাঙল কাঁধে করে গরুসমেত পথ ধরে হাল চাষে। ঘন কুয়াশার দর্পণে ভাস্বর হয় তাদের আবছা ছায়ামূর্তি। এ যেন শিল্পী জয়নুল আবেদিনের মুনশিয়ানায় গড়ে তোলা দিলকাশ দৃশ্য! খানিক পরেই কুয়াশার চাদর ভেদফুঁটো করে সূর্যের আলোকচ্ছটা এসে পড়ে পুবকে কেবলা বানিয়ে বারান্দায় আসন পেতে বসে থাকা নব্বই বসন্ত পেরিয়ে আসা বুড়ো মিয়াঁর কপাল কিংবা কপোলে। কিংবা জানলার কপাট খুলে আহ্লাদী সাজা শহুরে কোনো কিশোরীর ঠোঁটমুখে নয়তো ঝিকমিকিয়ে ওঠা শিশিরভেজা রঙিন ঘাসের ডগায়। তেমন হিমমাখানো বিহানে জড়োসড়ো হাতে গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বসে পড়ে আমার মতন কতক হেয়ালি আর খামখেয়ালি কিশোর। চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বদন হতে দূর করে শীতের আমেজ। কাপের মোড় হতে খুঁটে আনতে থাকে উষ্ণতাসমগ্র। আর ভাবনায় ডুবে—পৃথিবীর সমূহ সুখ পড়ে আছে শীতসকালের চায়ের কাপে। ঠিক সেই সময়টাতেই মাথায় ঘোরঘোর করে একখানা মন্দমধুর। ‘ইয়েস স্যার’ না বলেই হাজিরা দেয় আখতারুজ্জামান আজাদের ‘চা-পানের ইতিবৃত্ত’। যার শেষাংশে ডুবে ডুবে লীন হতে চায় অগণ্য বাঙাল যুবক—
একদিন সাবালিকা এসে টিএসসির
এই টি স্টলে!
এবং বলবে—
“শত বরষের শতেক স্বপন চায়ের কাপে মাখাও;
স্বপ্ন এবার সত্যি তোমার, চা খাও কবি, চা খাও!”
মিঠে-মিঠে রোদ। ধীরলয়ে হয়ে ওঠে তেজোদৃপ্ত। কড়া রোদের রেখায় চড়ে কড়া নাড়ে রোদ্দুরে দুপুর। রোদে গা জ্বলে যাবার ভয়ে খানিকক্ষণ ঘরকোণো হয় আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ফের তিয়াসী হয়। বাসনা জাগে রোদ্দুরে গা এলিয়ে দেবার। ঠিক দুপুরেই গ্রামবাঙলায় ধুম পড়ে যায় নাওয়াগোসলের। ভিড় জমে নদীপাড় আর পুকুরঘাটে। টাহর হয় হই-হুল্লোড় আর হ্যাঁচড়প্যাঁচড়। গোসল সেরে কাক-চিলের মতন পালক বিছিয়ে রোদেলা শহরে হাজির হয় গ্রাম্য বাঙালেরা। যদি থাকে উষ্ণ-মিষ্টি রোদ তাহলে তো আর কথাই নেই! এ ক্ষণটা হয়ে ওঠে ঢের আনন্দের। মা-ঝিঁরা পিচ্চি পিচ্চি ভাই বেরাদারদের গায়ে তৈল ঢেলে দেন সপসপা করে। যাতে শীতের আগ্রাসন থেকে বাঁচা যায় নিশ্চিন্তে! গ্রাম-বাঙলার এই সুখবেলাতেও আমার চোখ ঠেকে গোসল সেরে কল্লা নিচু করে হাতে লাঠিসমেত দাঁড়িয়ে থাকা বুড়ো দাদাদের ওপর। শীত-মৌসুমে ছেলেপুলেদের হৈ-হুল্লোড়ে কাঁপানো; দাপাদাপি করে সাঁতার কাটা ম্রিয়মাণ হলেও চোখে পড়ে বিস্তীর্ণ ময়দানে দলবেঁধে কালক্ষেপণ। সবুজের বুকমাঝে লাল। এই সবুজত্ব সম্পূর্ণ আঁচ করি শীতপ্রহরে। বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ। দৃষ্টির শেষতক সবুজবীথি। আদিগন্ত হলদে ফুলের সরষে ক্ষেত। মাঝখানটায় সবুজপাতার মায়াময় আঁকিবুঁকি। মনোহরা এই আয়োজন চোখে বাজে স্রেফ শীতকালেই। শীতই যেন রূপসী বাঙলার মূল রূপ। গ্রাম বাঙলার শীত যেন উঠতি বয়েসি সুদর্শনা আর ডাগরচোখা নারী।
পড়ন্ত বিকেল। চলি রূপসীর মাঠে।
খেলি। বসি। গল্পে ডুবি। রূপে ডুবে খেই হারাতে হারাতে গতরে মাখি— শীতবিকেলের মিঠেল রোদ! গিলে আসি— পুব কিম্বা পশ্চিমের হিমেল দমকা হাওয়া। এভাবেই দূর দিগন্তে রক্তিম আভাটুকু মিলিয়ে যায়।
সন্ধ্যে নামে। সন্ধ্যার আগমন টের পেলেই ফের ব্যস্ত হয়ে পড়েন মা-চাচীরা। পোলাপানের গায়ে ঢেলে দেন ভারী ভারী শীতেলা কাপড়। সন্ধ্যের বর্ণিল আলোকসজ্জায় গাঁ-গ্রামে হিড়িক পড়ে যায় পিঠা তৈরির। চুলোর ধারে চাদর মোড়ে বসে আঁচ পোহাতে পোহাতে গরম পিঠায় আলতো আলতো কামড়! আহা! এ যেন স্বর্গের সুখ! আজকাল এ-সুখের সাথী বনে যায় শহুরে যন্ত্রমানবেরাও। রাস্তার মোড়ে কিংবা পাশে উবু হয়ে। ঠেলাগাড়িতে করে পিঠা বানানো। পিঠা বেচাবিক্রি। শীতের ওসিলায় ভালোই জমে ওঠে পিঠা ব্যবসা। পিঠাঅলা মামা-মামীদের জীবিকা নির্বাহ। আহা! এ শীত এ যেন সুখের বারিধারা! এক পশলা রহমতের আগমন।
শীত। হিমশীতের মৌসুম।ঝরাপাতার বেলা। ঘন কুয়াশার মেলা। আর শিশিরভেজা রঙিন ঘাসের খেলা। পিঠে-পায়েস, খেজুর রস আর রবিশস্যের মৌসুম। জলের সাথে আড়ি রোদের সাথে ভাব জমানোর মৌসুম। গুছিয়ে বললে—সুখের মৌসুম। শান্তি আর কান্তির মৌসুম। তবে এ সুখ কি সর্বমহলের সকলের তরে! প্রতিটি বাঙালের! প্রতিটি মানবের তরে!
আহা! যদি হতো এমনই! বলা হতো না দুখের গল্প! তৈয়ার হতো না দুখসমগ্র!
এই তো সেদিন। ফজরের আজানের সাথে সাথেই ছুটলাম ‘বন্দর’ পানে। রাজারগলি থেকে বন্দরবাজার। রাস্তা আর দোকানপাটের বারান্দায় শরীরকে দলেমুচড়ে ফেলা টিস্যুর মতো করে বস্ত্রহীনভাবে রাত্রি যাপন করছে কত মানুষ। কারও গায়ে ছেঁড়া তাঁতের বস্তা। আহা! যদি দুপা এগিয়ে এসে হাত খুলত এ-শহরের পয়সাঅলা লোকগুলো। যদি হতো আমাদের বোধোদয়। খুলত বিবেকের দ্বার। হয়তো সাতসকালে কুয়াশাচ্ছন্ন মাঠে পাওয়া যেত না পাড়ার বৃদ্ধ বাবা-চাচাদের। বাড়িতে আসার পরদিন তেমনই হালে পেলাম সফির চাচাকে। শীতে কাঁপছেন ঠকঠক করে। হালচাল জিজ্ঞেস করলে জানালেন, ছেলেরা বউপোলাপান নিয়ে আলাদা থাকে। তাই এই বয়সে এসেও নিজের খানাখাদ্য নিজেকেই জুটাতে হয়। শীতের কাপড় নেই? জবাব দিলেন—আছে একটা। তবে চাচীর নেই বলে ওনাকেই পরিয়ে এসেছেন। আহা! এ যেন এক অন্য জগত। ভিন্ন সুখ। আর আলাদা দুখের আলিঙ্গন! শেষমেশ পরীক্ষা শুরুর দিন দুয়েক আগের কথা। পায়চারি করতে বেরোই। পাশের কলোনির ডজন খানেক বাচ্চাকাচ্চা মকতবে যাচ্ছে। শীতের সোয়েটার গায়ে। সবার গায়েই একই রঙের সোয়েটার। উঁকি মারতে লাগল স্মৃতিসমগ্র। স্মৃতিরা জড়ো হয়ে শুরু করে দেয় কানাকানি। এ স্মৃতি নয়তো বিস্মৃতির! এ স্মৃতি বিস্ময়ের। স্মৃতিগুলো তজম্মুল কাকাকে ঘিরে। আমাদের কজনের হাপিত্যেশেই তিনি শীতবস্ত্র বিতরণ করেছিলেন কলোনির কুঁড়ি পঁচিশটি ছেলেমেয়েকে। বেচারা বিদেয় হবারও মাস তিনেকে হয়ে গেছে। নয়তো নতুন করে আরও কিছু বায়না করা যেত! বেচারা কি এর বদলা পাবেন? নাহ‚ আমার জানা নেই! তবে মানবসেবা যদি এবাদতই হয়ে থাকে, তবে এর নিমাল বদল হিসেবে রব হয়তো ক্ষমাসুন্দর আচরণ করতে পারেন। হয়তো দিতেও পারেন জান্নাত-মাঝে এক বিশাল অট্টালিকা। আহা! আজও যদি মানুষজন আসত, হাত বাড়াত দুঃখীজনের দুখ দূর করার তাড়া নিয়ে। তবে আর জল আসতে না নয়নযুগলে, হাঁড় কাঁপানো শীতের শোকে। কবির কাব্যে—
যেথায় মানুষ মানুষেরে
বাসতে পারে ভালো
প্রতিবেশীর আঁধার ঘরে
জ্বালতে পারে আলো
সেই জগতের কান্না-হাসির
অন্তরালে ভাই
আমি হারিয়ে যেতে চাই।
থাক! এসব দুঃখ-শোকের কথা না-হয় মনখুলে অশ্রুসিক্ত চোখ নিয়ে বলা হবে অন্য কোনোদিন।
রাত বাড়ছে। গায়ে ভারী চাদর। চাদর মুড়ি থেকে হাত বের করে আঁকিবুঁকি করছি—সাদাশুভ্র পাতায়। যদিও ‘পৌষের শীত তুষের গায়/মাঘের শীতে বাঘ পালায়’ বলবার মতন শীত নেই! তবুও তো শীত!

শিক্ষার্থী, জামেয়া দরগাহ, সিলেট

জানুয়ারি ২০২২

ShareTweetShare

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১১ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি জানুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মার্চ ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

মাসিক নবধ্বনি মে ২০১৭ সংখ্যা

আমাদের সম্পর্কে

যোগাযোগ

সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা

© 2021 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT

No Result
View All Result
  • স্বাগত কলাম
  • প্রচ্ছদ রচনা
  • মুক্তগদ্য
  • গল্প
  • রঙধনু
  • দিনলিপি
  • পুরোনো সংখ্যা

© 2020 নবধ্বনি - Developed by Shabaka IT.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Create New Account!

Fill the forms below to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist