ইরাকের সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসাইনকে ফাঁসি দেওয়া হয় ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর। মধ্যপ্রাচ্যে সেদিন ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলমানদের আনন্দের দিনে তাঁর ফাঁসি স্তব্ধ করে দেয় সারা বিশ্বকে। ইরাকসহ মুসলিম দেশগুলোতে ঈদের খুশি ছাপিয়ে নেমে আসে শোকের ছায়া।
আমেরিকা তাঁকে ফাঁসি দেওয়ার জন্য ঈদের দিনটি বেছে নেবার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল, যে কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়ানো। বিশেষ ব্যক্তিদের মৃত্যুদÐ সাধারণত এভাবে দেওয়া হয়ে থাকে। বিশেষ কোনো দিনে যখন জনসাধারণের মনোযোগ অন্য দিকে থাকে এমন সময়ে চুপিসারে তাঁদের মৃত্যুদÐ কার্যকর করা হয়।
ইরাকে মার্কিন ও তাদের সহযোগী বাহিনীর হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে সাদ্দাম ছিলেন লোকচক্ষুর আড়ালে। ইরাকে মার্কিন বাহিনীর হামলার মূল লক্ষ ছিলেন তিনি। তাই গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল তাঁকে।
প্রায় চব্বিশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা সাদ্দাম হোসাইনের জীবনের বেশিরভাগ ঘটনার ভিডিওচিত্র বা বর্ণনা সংরক্ষিত আছে। একজন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তা স্বাভাবিক বিষয়। তবে তাঁর আত্মগোপন ও জেলে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতি অজানা রয়ে গেছে বেশিরভাগ মানুষের কাছে। এই দিনগুলো যে আরও বেশি রোমাঞ্চকর এবং গুরুত্বপূর্ণ তা কৌতূহলী যে কোনো মানুষই স্বীকার করবেন।
সাদ্দামের শেষ জীবনের দিনগুলোর কথা ভাবলে অন্য রকম এক সাদ্দাম হোসাইনকে আমরা দেখতে পাই। তাঁর শাসকজীবনের বর্ণাঢ্য দিনগুলো থেকে পুরোপুরি আলাদা ভিন্ন এক সাদ্দাম হোসাইন। নিয়তিকে যিনি মেনে নিয়েছিলেন মাথা নত না করেই। সাহসী ও দৃঢ়চেতা একজন মানুষ, যাঁকে বয়স, অক্ষমতা, কিংবা পরাজয়ও পরাজিত করতে পারেনি।
ইরাকে মার্কিন বাহিনীর হামলার পর সাদ্দাম তাঁর প্রাসাদ ত্যাগ করে পালিয়ে যান। ধারণা করা হয়, সেসময় তিনি ছিলেন তাঁর জন্মস্থান তিকরিতে। দুই ছেলে ছাড়া পরিবারের নারী সদস্যদের অন্য কোথাও পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দুই ছেলে উদাই ও কুসাই পালিয়েছিলেন তিকরিতের একটি বাড়িতে। তাঁদের আশ্রয়দাতা ছিলেন সাদ্দামের ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের একজন। নানা যুগের নানা দেশের বিশ্বাসঘাতকদের মতো তিনিও শত্রæদের টোপ গিলে জানিয়ে দেন উদাই ও কুসাই-এর অবস্থানের কথা। দুই ভাই আত্মসমর্পণ না করে নিহত হন বন্দুক যুদ্ধে। তাঁদের একজনের ১৪ বছর বয়সী ছেলেও নিহত হয় এই যুদ্ধে।
উদাই ও কুসাই নিহত হওয়ার পর মার্কিন বাহিনী আরও আশাবাদী হয় সাদ্দামকে গ্রেফতারের বিষয়ে। সাদ্দামের দেহরক্ষী ও ঘনিষ্ট ব্যক্তিদের তারা জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করতে থাকে। এদের কেউ কেউ তাঁর অবস্থান জানতেন না। কেউ জানলেও সে জায়গায় গিয়ে সাদ্দামকে পাওয়া যেত না। আবার কেউ কেউ ভুল তথ্য দিয়ে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করতেন।
তবে ততদিনে এতটুকু জানা গিয়েছিল যে, সাদ্দাম তিকরিতেই আছেন। প্রথমত তিকরিত ছিল তাঁর জন্মভ‚মি। তিকরিতের জনগণকে তিনি অনেক সাহায্য করেছিলেন, যে কারণে তিকরিতের অধিবাসীরা তাঁর জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিল। তাছাড়া আরবদের একটি বিশেষ ঐতিহ্যবাহী গুণ হচ্ছে আতিথেয়তা। শত্রুপক্ষের লোক হলেও আরবরা অতিথিকে সম্মান করে ও নিরাপত্তা দেয়। এসব মিলে আত্মগোপন করে থাকা খুব কঠিন ছিল না সাদ্দামের জন্য।
আরও একটি তথ্য ছিল মার্কিনিদের কাছে। জানা গিয়েছিল, সাদ্দাম এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাবার সময় পাঁচটি গাড়ির একটি বহর নিয়ে যান। বিশ্বস্ত কয়েকজন দেহরক্ষী তাঁর সঙ্গে থাকে। তিকরিতে বিভিন্ন বাড়িতে তিনি থাকেন। এসব বাড়ির লোকদের কাছে অস্ত্র আছে। সাদ্দামের জন্য তারা প্রাণ দিতে প্রস্তুত।
পাঁচ গাড়ির বহর এই কথাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল মার্কিন বাহিনীর জন্য। পুরো ইরাকে তারা গাড়ি চলাচলে নজরদারি করতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ স্ক্যানার বসানো হয়। একসঙ্গে কয়েকটি গাড়ির বহর দেখা গেলেই সংকেত দেবে এই স্ক্যানার। কিন্তু এই তথ্য মোটেও সহায়ক হয়নি তাদের জন্য। ততদিনে জানা যায়, সাদ্দাম একাই চলাচল করেন। ভাড়া করা ট্যাক্সি তাঁর বাহন। মার্কিন বাহিনী তাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রাখে।
অবশেষে আরেকজন বিশ্বাসঘাতকের সন্ধান পেয়ে যায় তারা। সাদ্দামের নিশ্চিত একটি অবস্থান জানা যায় তার কাছ থেকে। তিকরিতের একটি ছোট্ট বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সাদ্দাম। রাতের অন্ধকারে শব্দবিহীন হেলিকপ্টারে মার্কিন সৈন্যরা রওয়ানা হয় সেখানে। বাড়ির ভেতর প্রথমে সাদ্দামকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়ির অবস্থা দেখে বোঝা যায়, সাদ্দাম এখানে কিছুক্ষণ আগেও ছিলেন। ছোট্ট বাড়ির রান্নাঘরে প্রচুর খাবার পাওয়া যায়। পাশেই একটি কক্ষে ছিল বিছানা। পাশে ইরাকের পতাকা এবং বেশ কিছু বই।
সৈন্যরা বাড়ির আশপাশ তল্লাশি করতে শুরু করে। খড়কুটো দিয়ে ঢাকা ঝোঁপের মতো একটি স্থান দেখে সন্দেহ হয় তাদের। ঝোঁপ সরিয়ে পাওয়া যায় গর্ত। সেই গর্তে নামতেই দেখা মেলে ইরাকের প্রেসিডন্ট সাদ্দাম হোসাইনের। গ্রেফতার নিশ্চিত জেনে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। বলেন, ‘আমিই ইরাকের প্রসিডেন্ট সাদ্দাম হোসাইন।’ কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রায় দীর্ঘ তিন বছর ধরে চলে সাদ্দামের বিচার। তার ফিরিস্তি অনেক লম্বা। বিচার কার্যক্রমের ভিডিওও আছে ইউটিউবে। এখানেও সাহসী সাদ্দামকে আমরা দেখতে পাই। বিচারের শুরুতে নিয়মানুযায়ী তাঁর নাম জিজ্ঞাসা করা হলে বিচারককে তিনি বলেন, ‘তুমি আমার নাম জিজ্ঞেস করছ? আমার নাম জানো না?’ বিচারক তাঁকে বুঝিয়ে বলেন, ‘আইনে আছে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজের নাম-ঠিকানা বলবে। আপনার কি আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আছে?’ সাদ্দাম বলেন, ‘অবশ্যই আছে। কিন্তু আমি এখন এই আইন মানব না। আমি আইন এবং সংবিধানকে শ্রদ্ধা করি। আর তুমি এখন এইখানে বিচার করতে বসেছ দখলদারদের পক্ষ থেকে। ইরাকিদের পক্ষ থেকে না।’ এভাবে কিছুক্ষণ তর্ক করার পর সাদ্দাম নিজের পরিচয় দেন গণপ্রজাতন্ত্রী ইরাকের প্রেসিডেন্ট ও সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে।
বিচার কার্যের ভিডিওগুলোতে এমন অনেক আশ্চর্য দৃশ্য দেখা যায়। কখনো তিনি হাত উঁচিয়ে বিচারককে শাসাচ্ছেন। জোর গলায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে সমর্থন করে চলছেন। এক হাতে ধরা পবিত্র কুরআন। কখনো কুরআনের আয়াত পড়ে শোনাচ্ছেন বিচারককে। কখনো-বা উপস্থিত বিশ্বাসঘাতক সাক্ষীকে দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছেন।
তাঁকে রায় পড়ে শোনানোর দৃশ্যের কথা আলাদা করে বলার মতো। ফাঁসির রায় শোনার পর প্রায় পঁয়ষট্টি বছর বয়সী সাদ্দাম একটুও বিচলিত হননি। বরং হাত উঁচু করে জোরে শ্লোগান দেন, ‘জনগণ বেঁচে থাকবে। জাতি বেঁচে থাকবে। আমলারা একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।’ অথচ তার আগে অভিযুক্ত আরও তিনজনকে রায় পড়ে শোনানো হয়। ফাঁসির আদেশ শুনে কেঁপে উঠতে দেখা যায় তাঁদের।
জেলখানায় সাদ্দাম হোসাইন কেমন ছিলেন তার বর্ণনা দিয়েছেন প্রতক্ষ্যদর্শী অনেকে। জেনিস নামের এক মার্কিন নারী অফিসার ছিলেন সাদ্দামের দায়িত্বে। তিনি বলেন, সাদ্দাম হোসাইন তাঁর সঙ্গে বেশ শুদ্ধ ইংরেজিতে কথা বলতেন। তিনি এত ভালো ইংরেজি জানতেন তা জানা ছিল না অনেকেরই। জেনিস কথা বলতেন আরবিতে। একজন মার্কিন সেনা অফিসারের মুখে শুদ্ধ আরবি শুনে সাদ্দাম খুশি হতেন।
জেলের অফিসার ও সহবন্দী সবাই খুব সম্মান করতেন সাদ্দামকে। সাদ্দামও ভালো আচরণ করতেন। আরেকজন সেনা অফিসার বলেছেন, সাদ্দাম তার পালিয়ে বেড়ানোর দিনগুলোর গল্প তাঁকে শুনিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি গল্প তাঁকে খুব অবাক করেছিল। সাদ্দাম বলেছিলেন, এক রাতে তিনি একজনের আশ্রয় থেকে অন্য আরেক বাড়িতে আশ্রয়ের জন্য যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে অনেকগুলো বন্দুক ছিল। দজলা নদী পার হওয়ার সময় সাদ্দাম তাঁকে বলেন, ‘তুমি বন্দুকগুলো নিয়ে নৌকায় করে চলে যাও। আমি সাঁতরে নদী পার হব।’ এই বয়সেও গভীর রাতে সাঁতার কেটে দজলা নদী পার হওয়ার মতো ক্ষমতা ছিল সাদ্দাম হোসাইনের!
ফাঁসি দেওয়ার দু’দিন আগে সাদ্দামকে তাঁর শেষ ইচ্ছা কী জিজ্ঞেস করা হয়। সাদ্দাম তখন বলেছিলেন, ‘আমি যা চাওয়ার আমার রবের কাছে চাইব। আমি চাই না কেউ বলুক, সাদ্দাম কোনো শেষ ইচ্ছা পূরণের মাধ্যমে তাঁর মাথার মূল্য গ্রহণ করেছিলেন।’
ফাঁসির সময় জানার পর হেসে দিয়েছিলেন সাদ্দাম। এ দৃশ্য দেখে এক মার্কিন অফিসার এক ইরাকি কর্মকর্তাকে বলেছিলেন, ‘বীররা মৃত্যুর কথা শুনে কাঁদে না। সাদ্দাম হোসাইন যে একজন বীর, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’
সাদ্দামের গ্রেফতারের মুহূর্তের বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায় ইন্টারনেটে। সাধারণত গুরুত্বপূর্ণ যে কোনো সামরিক অভিযানের চিত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করা নিষিদ্ধ। কিন্তু সাদ্দামের গ্রেফতারসহ তাঁর ফাঁসির মুহূর্তের ভিডিও কীভাবে যেন এসে পড়ে জনসমক্ষে। বিশেষ করে তাঁর ফাঁসির মুহূর্তের ভিডিও কেউ গোপনে ধারণ করে ছড়িয়ে দেয় ইন্টারনেটে।
আমেরিকার কাছে পরাজিত একজন বীর আরব নেতার ফাঁসির এমন দৃশ্য সত্যিই হৃদয় বিদারক। তবে বিরাট এক সান্ত্বনা পাই আমরা এই ভিডিও দেখে। অকুতোভয় সাদ্দাম কালো কাপড়ে তাঁর মুখ ঢাকেননি। বলেছিলেন, আমার এর দরকার নেই। তারপর জোরে কালিমায়ে শাহাদাত পড়তে পড়তে তিনি নির্ভীক চিত্তে মৃত্যুকে বরণ করে নেন। এভাবে মৃত্যুর সময় কালিমা উচ্চারণ করা অনেক বড় ভাগ্যের বিষয়। বহু সাধনা করেও এমন সৌভাগ্য অনেকে পায় না। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লামের হাদিসকে সামনে রেখে বলতে পারি, সাদ্দাম হোসাইনকে মহান প্রভু ক্ষমা করে দিয়েছেন।
তাঁর ফাঁসির মুহূর্তের এই ভিডিও নিশ্চয় করা হয়েছিল তাঁকে অপমান করার জন্য। বিরোধীরা বিশ্ববাসীকে তাঁর অপমানজনক শেষ পরিণতি দেখাতে চেয়েছিল হয়তো। কিন্তু তাঁর কালিমা পাঠ তাঁকে চিরদিনের জন্য সম্মানিত করে দিয়েছে ইতিহাসে।
আরব বিশ্বের অনেক শায়খ বিভিন্ন টিভি প্রোগ্রামে এই বিষয়ে কথা বলেছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘সাদ্দাম শেষ জীবনে নিয়মিত কুরআন পড়তেন। কুরআনের সঙ্গে স¤পর্কের ওসিলায় আল্লাহ হয়তো তাঁকে এই সৌভাগ্য দান করেছিলেন।’
সাদ্দামের জীবনে অনেক ভুল ছিল। থাকাই স্বাভাবিক। মানুষ হিসেবে কেউই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। তবে তাঁর ভালো কাজের পরিমাণও কম না। ফিলিস্তিন-ইসরাইল প্রসঙ্গে তিনি যে আপোষহীন অবস্থান দেখিয়েছেন তাঁর মতো হয়তো আর কোনো আরব নেতা দেখাতে পারেননি। লেবানন ও সিরিয়াকে তিনি বলেছিলেন, ‘তোমাদের দেশের সীমান্ত কয়েক সপ্তাহের জন্য খুলে দাও। ফিলিস্তিনকে আমি স্বাধীন করে দেব। আধুনিক আরব নেতাদের মধ্যে তাঁর মতো স্বাধীনচেতা কাউকে আমরা দেখতে পাই না। আজকে সিরিয়া ও ইরাকের যে দুরবস্থা, সাদ্দাম বেঁচে থাকলে এমনটা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারত না।
তবে কঠোর শাসক হিসেবে কুর্দি ও শিয়াদের প্রতি তাঁর ক্রোধের মাত্রা একটু বেশিই ছিল। এই অপরাধ দেখিয়েই তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়। শুধু তাঁকে ফাঁসি দিয়েই শত্রুরা ক্ষান্ত হয়নি, ফাঁসির অনেক দিন পর সেখানে উপস্থিত ছিলেন এমন এক ব্যক্তি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, ‘ফাঁসির রশিতে মৃত্যু হওয়ার আগেই সাদ্দামের দেহ নামানো হয় মাটিতে। তখনো তাঁর দেহে প্রাণ ছিল। কয়েকজন লোক তাঁর ওপর দাঁড়িয়ে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে।’
সাধারণত ফাঁসির আসামিকে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার আগে রশি থেকে নামানো হয় না। যারা তাঁকে ফাঁসি দিয়েছিল তাদের মধ্যে ইরানপন্থী কয়েকজন শিয়া ছিল। নিজেদের জিঘাংসা মেটানোর জন্য তারা এমন পূর্বপরিকল্পনা করে রেখেছিল। এই ঘটনার কোনো তদন্ত বা প্রতিবাদ কেউ করেনি বা করার প্রয়োজন মনে করেনি।
সাদ্দামের নানা কর্মকাণ্ডের মতো হয়তো একদিন এরও বিচার হবে। ইতিমধ্যেই আমেরিকা তাদের ভুল স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, ইরাকে আগ্রাসন এবং সাদ্দামকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ছিল একটি ভুল। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না বলেই আমরা জানি। ততদিন শুধু সাদ্দাম হোসাইন ইতিহাস হওয়ার অপেক্ষা।
নাজমুস সাকিব তরুণ অনুবাদক এবং নবধ্বনির সহকারী সম্পাদক
ডিসেম্বর ২০১৮ সংখ্যায় প্রকাশিত